স্কুল-কলেজ খোলার আশায় বাংলাবাজারের প্রকাশকরা

দেশে বই ছাপানো, বিক্রি এবং সরবরাহের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র রাজধানীর পুরান ঢাকার বাংলাবাজার। করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অন্যান্য খাতের মতো হুমকির মুখে পড়েছে পুস্তক প্রকাশনী ও লাইব্রেরিগুলো। যার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। বছরের শুরুতে স্কুল কলেজের বিভিন্ন শ্রেণির নতুন বই কেনা-বেচার জমজমাট অবস্থা ও ছাপাখানায় বিপুল পরিমাণ ভিড় থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। স্কুল-কলেজ খোলার আশায় বাংলাবাজারের প্রকাশকরা সময় কাটাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতাশূন্য অবস্থায় সময় পার করছেন লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষরা। একই অবস্থা প্রকাশনীগুলোতেও। ক্রেতা না থাকায় দিনের বেশিরভাগ সময় বসেই কাটাতে হচ্ছে তাদের। স্বল্প কয়েকটি দোকানে কদাচিৎ দুয়েকজন ক্রেতা আসলেও খুব কম সংখ্যক ক্রেতাই বই কিনছেন।
এ বিষয়ে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রকাশনী কাজল ব্রাদার্সের কম্পিউটার অপারেটর হাফিজ বলেন, ‘করোনার জন্য আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা মূলত স্কুল কলেজের সহায়ক বইয়ের কাজ করি। যে কারণে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকাতে আমাদের বই বিক্রির কয়েকটা সিজন চলে গেছে কিন্তু বেচাকেনা নেই। স্কুল-কলেজ খুলে দিলে আমরা নতুন বই ছাপাব।’

ঐতিহ্য প্রকাশনীর বই বিক্রেতার দায়িত্বে থাকা আমজাদ হোসেন খান কাজল বলেন, ‘আমরা প্রতিবার বইমেলাকে কেন্দ্র করে নতুন লেখকদের লেখা সংগ্রহ করি। আমাদের ব্যস্ততা ভালো আছে, তেমন খারাপ নয়। বই বিক্রি স্বাভাবিক আছে।’
গাজী পাবলিশার্সের বই বিক্রির দায়িত্বে নিয়োজিত মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নতুন কোনো বই ছাপাইনি। স্কুল-কলেজ খুললে ছাপানোর ব্যবস্থা হবে। আগের ছাপানোগুলো বিক্রি করছি।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নীতিমালা কমিটির আহ্বায়ক কাজী জহুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘সরকারের কাছে প্রকাশনা সেক্টরের জন্যে ২০০ কোটি টাকার প্রণোদনার জন্য আমরা আবেদন করেছি। তবে আমরা এখনও প্রণোদনা পাইনি। মূলত প্রণোদনার ক্রাইটেরিয়াতে আমরা প্রকাশকরা ক্ষুদ্র শিল্প নাকি মাঝারি শিল্পে পড়ছি, সেখানে সমস্যা হচ্ছে। আমরা যারা সাধারণ বই ব্যবসায়ী, তারা মানবেতর জীবনযাপন করছি। এখন ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে সেই প্রত্যাশায় আছি। এখন সবাই কেবল সেই সময়ের অপেক্ষায়।’
এমটি/এফআর