ঢাকায় ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চালু, দিল্লির পথে জয়শঙ্কর

একদিনের ঝটিকা সফর শেষে ঢাকা ছেড়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। ঢাকা ছাড়ার আগে গুলশানের ভারত ভবনে (পুরোনো হাইকমিশন ভবন) একটি ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জয়শঙ্করের ঢাকা ছাড়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাত ৯টা ৪০ এর পর দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন।
এদিকে ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন শেষে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমাদের বিনিময় করা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দুই দেশের অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে। এ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করতে পেরে আমি আনন্দিত এবং প্রত্যয়ের সঙ্গে বলতে চাই, এটি বন্ধুত্বের ক্ষেত্রেও একটি চক্রকেন্দ্র পরিণত হবে।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছান জয়শঙ্কর। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন তাকে স্বাগত জানান।
এরপর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলে বৈঠক। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মোমেন ও জয়শঙ্কর।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সম্পর্কের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কাজ করছে ঢাকা-নয়া দিল্লি। দক্ষিণ এশিয়াতেই নয়, বিস্তৃত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেও ঢাকা নয়া দিল্লির গুরত্বপূর্ণ অংশীদার; আর এ সম্পর্কের প্রতিটি অর্জন সমগ্র অঞ্চলকে প্রভাবিত করে।’
সামনের দিনগুলোতে এ সম্পর্ক সম্প্রসারিত করার ক্ষেত্রে ঢাকা-নয়া দিল্লির মধ্যে কানেক্টিভিটির ওপর জোর দেন জয়শঙ্কর। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, দুই দেশ যদি কানেক্টিভিটির জায়গায় ঠিকমত কাজ করে, তবে পুরো বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের চেহারাই পাল্টে যাবে।
এ সময় ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সীমান্ত হত্যা, তিস্তাসহ ছয়টি অভিন্ন নদীর পানিবন্টন নিয়েও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। সীমান্ত হত্যার পেছনে তিনি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে দায়ী করেন; সেইসঙ্গে সীমান্তে প্রতিটি হত্যাই পরিতাপের বলে মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে তিস্তাসহ ছয়টি অভিন্ন নদীর পানিবন্টন নিয়ে খুব সংক্ষিপ্ত উত্তরে জয়শঙ্কর জানান, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিফ্রিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর নিয়ে মূল আলোচনা হয়েছে। সফরের সময়ে বঙ্গবন্ধু-বাপু জাদুঘর উদ্বোধন করা হবে। এ সময় বাংলাদেশে করোনার ভ্যাকসিন সরবরাহ করায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মোমেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে অমিমাংসিত ইস্যুগুলোর সমাধান আলোচনার মাধ্যমে করার তাগিদ দেন।
এর আগে ২০১৯ সালে প্রথম ঢাকা সফর করেন জয়শঙ্কর। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এটি তার দ্বিতীয় ঢাকা সফর।
এনআই/এসএম