বিনিয়োগ বাড়াতে কূটনীতিকদের কাজ করার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

বাংলাদেশকে পেছনে ফেলার প্রবণতা রয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিদেশে অবস্থানরত সব রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধানের বাংলাদেশের সঠিক চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি, দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
রোববার (০৭ মার্চ) সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ অনুরোধ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বল্প আয়ের দেশ থেকে উন্নয়শীল দেশে এসেছি। এটা বিরাট অর্জন। বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু। এই চিত্র তুলে ধরতে হবে দেশে-বিদেশে। আমাদের সম্ভাবনাময় অর্থনীতিকে তুলে ধরতে হবে। আমাদের যত রাষ্ট্রদূত আছেন, যত মিশন প্রধান আছেন তাদের অনুরোধ করছি; আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের উন্নয়ন করা সম্ভব না।’
বিদেশে বাংলাদেশিকর্মীদের জন্য আরও কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি মিশনগুলোতে সেবার মান আরও বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধানদের তাগিদ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে মোমেন জানান, ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিন এক নাগাড়ে অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি আমরা। এই সময়ের মধ্যে আমাদের প্রতিবেশী চারজন রাষ্ট্রপ্রধানও তখন আসবেন।
মোমেন বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিক কবি আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্লেষণ করা উচিত। তিনি ১৯ মিনিটের ভাষণে সব ব্যাখ্যা তুলে ধরেছিলেন। তিনি তার বক্তব্যকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন যেন কেউ রাষ্ট্রদ্রোহী না বলতে পারে।’
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে সব পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানান।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি ডায়ালগ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা সব সূচকে ভালো করেছি। আমাদের অর্জন হয়েছে। এই অর্জনগুলোর আত্মসন্তুষ্টি নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ডলারে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের অর্থনৈতিক কূটনীতি এবং রাজনৈতিক কূটনীতিতে জোর দিতে হবে; পালস অব গ্লোবাল ট্রেড বুঝে এগোতে হবে।’
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে মানুষের মুক্তির পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তি ও সাংস্কৃতিক মুক্তির কথা বলেছেন। এগুলো ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। পাঁচ বছর সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে আমাদের সামনে এগোতে খুব বেশি সমস্যা হবে না। আমাদের সামনে অনেক সম্ভাবনার সুযোগ রয়েছে; বিশেষ করে কানেকটিভিটি, পদ্মাসেতু, কর্ণফুলী টানেল, বে-টার্মিনাল, গভীর সমুদ্র বন্দরসহ চলমান প্রকল্পগুলো অপারেশনে এলে অগ্রযাত্রায় সহায়ক হবে।’
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘কোভিডের সময় স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা বেশ ভালোভাবেই করেছে সরকার। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের এলডিসি গ্রাজুয়েশন গর্বের বিষয়। আমাদের দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি খাতকেও সামনে নিতে কাজ করছেন।’
এনআই/জেডএস