ভারতীয় জাহাজের প্রথম মংলা সফর

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ পূর্তির ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য দুটি ভারতীয় জাহাজ দুই দিনের সফরে মংলা বন্দরে আসছে। এটি প্রথমবারের মতো ভারতীয় জাহাজের মংলা সফর।
সোমবার (৮ মার্চ) ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। জাহাজ দুটির নাম আইএনএস কুলিশ ও আইএনএস সুমেধা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় জাহাজ আইএনএস কুলিশ ও আইএনএস সুমেধা ৮ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত মংলা বন্দর সফর করবে। এই সফরটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এটি প্রথমবারের মতো ভারতীয় জাহাজের মংলা সফর। সর্বশেষ ৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৯/১০ ডিসেম্বর পদ্ম ও পলাশ নামে দুটি গানবোটে করে ভারতীয় নৌবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা পশুর নদীর ওপর দিয়ে যৌথভাবে একটি গোপন অভিযান পরিচালনা করে এবং বন্দরে বিভিন্ন পাকিস্তানি স্থাপনায় হামলা চালায়।
ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতি ভারতীয় নৌবাহিনী যে গুরুত্ব দেয় তা বোঝানোর জন্য জাহাজ দুটি ছাড়াও ভারতীয় নৌবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অন্ধ্র প্রদেশের নৌ অফিসার ইনচার্জ কমডোর মহাদেবু গোবর্ধন রাজু জাহাজে করে যাত্রা শুরু করেছেন।
আইএনএস সুমেধা স্থানীয়ভাবে নির্মিত একটি অফশোর টহল জাহাজ। জাহাজটির নেতৃত্বে রয়েছেন কমান্ডার গৌরব দুর্গাপ্রসাদ। ভারতের বিশাল বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) টহল ও নজরদারির জন্য জাহাজটি তৈরি করা হয়েছে। প্রধান বন্দুক এবং অ্যান্টি এয়ারক্রাফট বন্দুকের পাশাপাশি জাহাজটিতে একটি এএলএইচ/আলুয়েট হেলিকপ্টারও রয়েছে।
দ্বিতীয় জাহাজ আইএনএস কুলিশও অ্যান্টি-সারফেস ওয়ারফেয়ার অভিযানের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। জাহাজটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন কমান্ডার সঞ্জীব অগ্নিহোত্রী এবং এটি সারফেস টু সারফেস ক্ষেপণাস্ত্র, প্রধান বন্দুক, অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট গান এবং অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা সজ্জিত রয়েছে। এটি হেলিকপ্টার পরিচালনা করতেও সক্ষম।
হাইকমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সফরকালে ভারতীয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তারা ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর মংলায় গানবোট পলাশে করে যুদ্ধরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। ভারতীয় জাহাজগুলি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাবে এবং সশস্ত্র বাহিনী যাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দেবে।
এছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে পেশাগত আলোচনা এবং মংলা ও খুলনায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে। উভয় বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে প্রীতি খেলাধুলা এবং জাহাজে সফরের ব্যবস্থা থাকবে। আগামী বুধবার (১০ মার্চ) ভারতে যাত্রা করার সময় উভয় নৌবাহিনী একটি যৌথ মহড়া পরিচালনা করবে।
এই সফর ভারতী ও বাংলাদেশের মধ্যে দৃঢ় ও সমৃদ্ধ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে হাইকমিশন।
এনআই/এইচকে