এমপি মাহমুদ উস সামাদের না বলা কথা

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই নিজ এলাকায় তৈরি করেছিলেন আইসোলেশন সেন্টার। লকডাউন চলাকালে হতদরিদ্র মানুষকে সহায়তা করতে তিনি নির্বাচনি উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে নিয়োগ দিয়েছিলেন প্রতিনিধি। তাদের কাজ ছিল হতদরিদ্র মানুষের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া। লকডাউন চলাকালে বেকার হয়ে পড়া প্রবাসীদের পরিবারের পাশেও দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
করোনা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে নিজের বাড়িতেই আয়োজন করেছিলেন সচেতনতামূলক কর্মশালার। সেই মানুষই করোনার কাছে হার মেনে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। তিনি সদ্য প্রয়াত সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এ কারণে গত রোববার (৭ মার্চ) কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দেননি তিনি। ওইদিন ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিতে বিমানে ওঠার সময় হাঁপিয়ে পড়েন এবং বিমানে অসুস্থ অনুভব করায় সেখান থেকে সরাসরি হাসপাতালে ভর্তি করা তাকে।

মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত সচিব জুলহাস আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, রোববার (৭ মার্চ) রাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। বিকালে তার ফল পজিটিভ আসে।
ঢাকার মহাখালীস্থ বাসায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বলেছিলেন, অনেক প্রবাসী ফোন দিয়ে বলতেন হাতে টাকা না থাকায় পরিবারের মানুষ অনেক কষ্ট আছে। তাদের কথা শুনে আমি ২১টি ইউনিয়নে প্রতিনিধি নিয়োগ দেই। এলাকার দোকানগুলোয় বলে রাখি, আমি বললেই যেন চাহিদা জানানো মানুষের কাছে খাদ্য ও নিত্যপণ্য দেওয়া হয়। সেই অর্থের জোগান আমিই দিতাম। আমি তাদের সেবা করতে পেরে খুশি। করোনা সংক্রমণের প্রথম ধাপে ২০২০ সালের মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে তিন হাজারের বেশি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছিলাম।

মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বলেন, প্রবাসে দীর্ঘ আট বছর কাটিয়েছি। একপর্যায়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ি। ৫২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি আমার মা ও ধরিত্রীর সেবা করতে পেরে কৃতজ্ঞ।
মাছ-সবজিসহ নানা খাদ্যসামগ্রী তার বাড়ির সামনের সিঁড়িতে থরে থরে সাজানো থাকত। সকাল ও বিকাল এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হতো এলাকার মানুষের মাঝে। তার এ সহায়তা থেকে বাদ যায়নি চা শ্রমিকরাও। আর এসব কিছুই করতেন নিজের তহবিলের টাকা দিয়ে।
পিএসডি/এসকেডি/এমএমজে