জালিয়াতি চক্রের এনআইডি সংশোধন, বুঝতেই পারেননি কর্মকর্তা

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনে আবারও একটি চক্র সক্রিয় হয়েছে। চক্রটি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল বাতেনের ইউজার আইডি ব্যবহার করে এনআইডি সংশোধনে জালিয়াতি করছে। তবে সক্রিয় চক্রটিকে এখনও ধরতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন করতে বর্তমানে কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস) ব্যবহার করছে ইসি। এতে প্রতিটি কর্মকর্তার নামে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড রয়েছে। ফলে কে কোন এনআইডি সংক্রান্ত কী কাজ করছেন, তা সংরক্ষিত থাকে।
মূলত দুর্নীতিরোধে এই সিস্টেমটি ওয়াচডগের কাজ করে। এই সিস্টেম পাশ কাটিয়ে দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ একজন কর্মকর্তার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে এক ব্যক্তির এনআইডি সংশোধন করা হয়েছে। যেখানে কারো আইডিতে ঢুকতে গেলে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ডের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু ওই কর্মকর্তার ফোনে কোনো ওটিপিও যায়নি। ঘটনাটি অতি সম্প্রতিই ঘটেছে বলে জানিয়েছে ইসি সূত্র।
ইসি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ‘মির্জাপুরের গোড়াই ইউনিয়নের কদিম দেওহাটা গ্রামের মো. শাহিন হোসেন সারিং (এনআইডি নম্বর ১৯৭৬৯৩১৬৬৫৫৯৫৭৩৭৩) নামক এক ব্যক্তির বয়স ১২ বছর সংশোধন করা হয়েছে অনৈতিকভাবে। এ বিষয়টি নজরে আসার পর অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোশারফ হোসেন ব্যাখ্যা চান মির্জাপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল বাতেনের কাছে।’
অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার ব্যাখ্যার প্রেক্ষিতে গত ৮ মার্চ আব্দুল বাতেন জবাবে লেখেন, ‘মো. শাহীন হোসেন সারিং সংশোধনের আবেদনটি বাতিলের জন্য আবেদন করেন। উক্ত আবেদনপত্রটি ২৩ ফেব্রুয়ারি আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করি। তখন উক্ত আবেদনটি ‘গ’ ক্যাটাগরিতে ছিল। কিন্তু ১ মার্চ বেলা ১৭ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট ২২ সেকেন্ড সময়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের ইউজার আইডি ব্যবহার করে আবেদনের ক্যাটাগরি ‘গ’ থেকে ‘ক’ ক্যাটাগরিতে পরিবর্তন করা হয়েছে। একই ইউজার আইডি ব্যবহার করে একই সময়ে অর্থাৎ বেলা ১৭ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট ২২ সেকেন্ড সময়ে সংশোধন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমি এ সংশোধনের বিষয়ে অবগত নই।’
‘এছাড়া একই সময়ে ক্যাটাগরি পরিবর্তন ও সংশোধন অনুমোদন করা হয়েছে। কাজেই বিষয়টিতে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ‘গ’ ক্যাটাগরির আবেদনপত্র ‘ক’ ক্যাটাগরি করার ক্ষমতা স্বাক্ষরকারীকে দেওয়া হয় নাই। এছাড়া সিএমএস থেকে আমার মোবাইলে কোনো ওটিপি আসেনি।’
এসআর/ওএফ