পি কে হালদারের বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক

রিলায়েন্স ফাইন্যান্স এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) সহযোগী ও বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালকে আবারও রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (১৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এর আগে সকালে অবন্তিকা বড়ালকে কাশিমপুর কারাগার থেকে দুদকে আনা হয়।
এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ (পরিচালক) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অবন্তিকা বড়ালকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরে আগে ৪ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন অবন্তীকাকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে হাজির করেন। ওইদিন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ অবন্তীকাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ১৩ জানুয়ারি সকালে ধানমন্ডির ১০ নম্বর সড়কের একটি বাসা থেকে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম অবন্তীকাকে গ্রেফতার করেছিল।
২০১৬ সালে ৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় ধানমন্ডির ১০ নম্বর রোডে প্রায় তিন হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট গিফট করেন পি কে হালদার। শুধু তাই নয়, অর্থ আত্মসাতের মহাপরিকল্পনায় পি কে হালদার, তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী এবং অবন্তিকা বড়াল মিলে প্রথমে ‘সুখদা’ নামে একটি কোম্পানি গড়ে তুলেছিলেন। যার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সব বিষয়ে জানতেই অবন্তিকা বড়ালকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক।
অভিযোগ রয়েছে, পি কে হালদার ওই প্রতিষ্ঠানসহ পিপলস লিজিং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) দায়িত্ব পালন করে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন।
ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পরপরই প্রশান্ত কুমার হালদারের নাম উঠে আসে। গত ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে রেড এলার্ট জারি করে ইন্টারপোল।
এছাড়া ৯ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের সম্পৃক্ততায় পি কে হালদারের পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
এর আগে ২৫ জানুয়ারি পি কে হালদার কেলেঙ্কারিতে ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৩ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক আরও ৫ মামলা করে দুদক। সর্বশেষ গত ৯ মার্চ কাগুজে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আলোচিত পি কে হালদারসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ১০ মামলা অনুমোদন দেয় সংস্থাটি।
এ কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ৭ জন। যাদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী ছাড়াও পি কে হালদারের সহযোগী শংখ বেপারী ও রাশেদুল হক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আরএম/এসএম