হাতিয়েছে কোটি টাকা, গ্রেপ্তার ১১

নাম মানবাধিকার সংস্থা, কাজ এমএলএম ব্যবসা

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:৪০ পিএম


নাম মানবাধিকার সংস্থা, কাজ এমএলএম ব্যবসা

মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে ১১ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে/ ছবি : র‌্যাব

মানবাধিকার ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার আড়ালে ‘এমএলএম’ ব্যবসার মাধ্যমে কয়েক হাজার গ্রাহকের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে এই প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, প্রতারক চক্রের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত মো. আব্দুল কাদের (৪৪), তার সহযোগী মির্জা নাসির উদ্দিন (২৫), মাহফুজুর রহমান (৫০), এ আর আব্দুল মোমেন (৪৯), মেহেদী হাসান (২৫), আমজাদ হোসেন (৩৪), মঞ্জুরুল হাসান খান (৩৫), আব্দুল বারিক (৩৮), রুহুল আমিন (২৫), মোছা. মুন্নি (৩০) এবং নিলুফা ইসলাম নিপা (৩৪)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪টি কম্পিউটার, ৪টি ল্যাপটপ, ১৭টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই, ভাউচার, চুক্তিনামা, প্যাড, সিল ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। অফিসে আটকে রাখা এক ভিকটিমকেও এসময় উদ্ধার করা হয়।

বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

dhakapost

তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার আড়ালে এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। তারা পরস্পর যোগসাজশে মানবাধিকার ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার নাম ব্যবহার করে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করছিল।

অভিযুক্তরা সমাজের নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তদের টার্গেট করে মাসিক ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে মাসিক ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সংস্থাটির দাতা সদস্য বানায়। এ জন্য অনুদান হিসেবে জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করত। চক্রটি এরই মধ্যে হাজারো মানুষের কাছে থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

চক্রটির মূল হোতা আব্দুল কাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ এর সিও বলেন, কাজের নামে দাতা সদস্যদের দিয়ে এমএলএমের আদলে নতুন দাতা সদস্য সংগ্রহের কাজ করাতেন আব্দুল কাদের। ভুক্তভোগীদের বলা হতো ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার পর বেতন ১০ হাজার টাকা হবে। কাজ দেওয়া হতো সোর্স বা ইনফরমারের। এলাকায় বাল্যবিবাহ হলে, দরিদ্র পরিবার মেয়ে বিয়ে দিতে না পারলে এবং নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা হলে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের জানাতে বলা হতো।

dhakapost

এমন সহজ চাকরির আশায় ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার পর তাদের জানানো হতো নতুন দাতা সদস্য আনতে হবে। নতুন সদস্য আনতে না পারলে বেতন হবে না। অথচ চক্রটি টাকা নেওয়ার আগে লোক সংগ্রহের বিষয়ে কিছুই বলত না।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, ভুক্তভোগীরা টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়ে বেতন না পেয়ে বাড্ডার অফিসে গেলে তাদের মামলা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার ভয় দেখায় চক্রটি। অধিকাংশ সদস্যই সমাজের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।

জেইউ/এসকেডি

Link copied