অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজধানীতে ব্লকরেইড

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আগামী বুধবার (১৭ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান। ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ২৬ মার্চ পর্যন্ত জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে এ অনুষ্ঠান চলবে। এই সময়ে দেশি-বিদেশি ভিআইপি অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্লকরেইড শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এর আগে ডিএমপি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছে, আমন্ত্রিত বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার বিষয়ে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে ভিভিআইপি নিরাপত্তার যে প্রটোকল রয়েছে, সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। পাশাপাশি দেশে মোদিবিরোধী আন্দোলনের নামে কেউ রাষ্ট্রের সুনাম নষ্ট করলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিদেশি অতিথিরা থাকবেন সোনারগাঁও হোটেলে। ভিআইপি অতিথিদের মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গমনাগমন ও উৎসবে যোগদানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। অহেতুক আড্ডা, গণজমায়েত বন্ধের পাশাপাশি সন্ত্রাসী কার্যক্রম যাতে না হয় সেজন্য চালানো হচ্ছে ব্লক রেইড।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএমপি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপির পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী পুলিশ কাজ করছে। রমনা এলাকায় যাতে মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তীতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা হিসেবে ব্লকরেইড চালানো হচ্ছে।
অন্যদিকে তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের এডিসি হাফিজ আল ফারুক ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোথাও যাতে নিরাপত্তা ঝুঁকি না থাকে, সেজন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিএমপি থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তেজগাঁও বিভাগ পুলিশ কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে সোনারগাঁ হোটেলের আশপাশে যেমন- বাংলামোটর, মগবাজার, কারওয়ান বাজার এলাকার আশপাশে ব্লক রেইড চলছে।
রোববার (১৪ মার্চ) মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় ৫টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আসবেন। এটি আমাদের জন্য আনন্দের। উদযাপন নিয়ে কাউকে আন্দোলন না করার অনুরোধ করছি।
উৎসবে আমন্ত্রিত বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে নিরাপত্তার বিষয়ে কম্প্রোমাইজের সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে ভিভিআইপি নিরাপত্তার যে প্রটোকল রয়েছে সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।
আসন্ন উৎসবে কোনো নিরাপত্তার ঝুঁকি নেই। তবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার কথা আহ্বান জানান ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার।
সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা ঘোষণা করেছে। ১৭ থেকে ২৬ মার্চ এসব অনুষ্ঠান করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা ঘোষণা করেছে। ১৭ থেকে ২৬ মার্চ এসব অনুষ্ঠান করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
দশ দিনের অনুষ্ঠানমালায় ১৭, ২২ এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ১৭, ১৯, ২২, ২৪ এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। এই পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকার প্রধানরা অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
১৭ মার্চের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ, ১৯ মার্চ শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, ২২ মার্চ নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারী, ২৪ মার্চ ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন।
এই পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে ৫০০ জন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া এই পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানসহ অন্য পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানমালায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ধারণকৃত বক্তব্য প্রচার করা হবে।
জানা গেছে, ১৭ মার্চের অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ১৮ মার্চ কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন, ২০ মার্চ ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল ড. ইউসেফ আহমেদ আল-ওথাইমিন, ২২ মার্চ জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা, ২৪ মার্চ পোপ ফ্রান্সিস, ২৫ মার্চ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চুং স্যু-কুয়েন এবং মুক্তিযুদ্ধের বিদেশি বন্ধু তাকাশি হায়াকাওয়ার ছেলে ওসামু হায়াকাওয়া বক্তব্য রাখবেন।
জেইউ/এমএইচএস