ডাব-কলা-বিস্কুট খাইয়ে সর্বস্ব লুট

যাত্রী বেশে বিভিন্ন গণপরিবহনে উঠা বা জনসমাগমস্থলে ভিড়ের মধ্যে নিরীহ যাত্রী বা পথচারীদের সাথে সখ্য গড়ে তোলা ছিল প্রথম কাজ। এরপর চেতনানাশক ঔষধ মিশ্রিত বিস্কুট, কলা, কেক, পানি ও ডাব খাওয়ানো হতো। আর শেষে সুযোগ বুঝে সর্বস্ব লুটে কেটে পড়তো।
সম্প্রতি সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর উঠে আসে এ তথ্য। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের চেতনানাশক ট্যাবলেট ও পানীয়, ঝাঁঝালো পদার্থ মিশ্রিত ভ্যাসলিন উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, চক্রটির প্রধান টার্গেট থাকতো বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালসহ যে কোন জনসমাগমস্থল। এরপর টার্গেট মিলিয়ে মোবাইল, মানিব্যাগ, ল্যাপটপসহ সর্বস্ব লুটে নিত তারা।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. মজিবুর রহমান, নাসির উদ্দিন, হারুন অর রশিদ, জয়নাল, কবির হোসেন, মো. হারিছ, মো. আরব আলী ও ইদ্রিস মুন্সি।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, নগরীতে মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টি চক্রের দৌরাত্ম বৃদ্ধি রোধ ও সাধারণ যাত্রী ও পথচারীদের দুর্ভোগ লাঘব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ নিয়মিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত পর্যন্ত শ্যামলী শপিং সেন্টার ও শ্যামলী হল এলাকা অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ এসব চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের অপরাধের কৌশল সম্পর্কে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, চক্রের সদস্যরা মূলত যাত্রী বেশে বিভিন্ন গণপরিবহনে উঠে বা বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালসহ জনসমাগমস্থলে ভিড়ের মধ্যে নিরীহ যাত্রী বা পথচারীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। পরে তাদেরকে বিস্কুট, কলা, কেক, পানি, ডাব ও অন্যান্য খাবার খাওয়ানোর আমন্ত্রণ জানায়। ঐসব খাদ্যদ্রব্যে সাথে অজ্ঞান করার ঔষধ মিশিয়ে মোবাইল, মানিব্যাগ, ল্যাপটপসহ সর্বস্ব লুটে নেয়া হতো।
সারাবছর তারা এই কাজ করলেও ঈদ, পূজা, রোজাসহ অন্যান্য পার্বনকে সামনে রেখে তাদের তৎপরতা বেড়ে যায় বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, তারা আগেও ডিবি পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়েছে এবং তাদের নামে মহানগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জেইউ/এমজে