সিটেই থাকতে চাইছিলাম, হেরা আমারে রিলিজ কইরা দিছে

‘৩ দিন হাসপাতালে ছিলাম। সঙ্গে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরাও ছিল। আমি সিটেই থাকতে চাইছিলাম, হেরা আমারে রিলিজ কইরা দিছে।’ আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন চাঁদপুর থেকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসা নিতে আসা সাইফুল ইসলাম।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, গেল মার্চের ২ তারিখ গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। বুঝতে পারেন পায়ের হাড় ভেঙে হয়ে গেছে। স্থানীয়দের পরামর্শে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে সেদিনই আসেন এখানে। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাৎক্ষণিকভাবে করা হয় অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচারের পর শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলেও অনেকটা নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই ৩ দিন পর হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয় তাকে।
চাঁদপুরে ফিরে যাবার পর পায়ের অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকলে নিটোরে ফিরে আসেন পেশায় দিনমজুর সাইফুল ইসলাম। আবারও পায়ে অস্ত্রোপচার করাতে হবে- চিকিৎসকের এমন পরামর্শে তিনি অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন। তিনি জানান, অস্ত্রোপচারে প্রথমবার খরচ হয়েছিল ৭০ হাজার টাকা। এখন আবারও পায়ের অস্ত্রোপচারের টাকা কোথায় পাবেন?
সাইফুলের সঙ্গে এসেছেন ভাগ্নে মো. হোসেন। আক্ষেপের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘মামার চিকিৎসার জন্য আগের ধার-দেনাই পরিশোধ হয়নি। সেসময় সহযোগিতা করেছিলেন এলাকার বিত্তশালীরা। তবে আবারও অস্ত্রোপচারের টাকা কিভাবে জোগাড় করবো?’
সাইফুল বলেন, ‘পায়ে রড লাগানোর পর ড্রেসিং ও এক্সরের ফি দিছি। তারপরেও ড্রেসিং করাইতে গেলে এক্সট্রা ৫০ টাকা আর এক্সরে করাইতে লাগে ১০০ টাকা।’ শুধু তিনিই নন, একই অভিযোগ চিকিৎসা নিতে আসা অনেকেরই।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই শতাধিক মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। এখানে আসা রোগীদের তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়া হয় জরুরি বিভাগে। চিকিৎসার পর অনেকে সুস্থ হয়ে ফিরে যান, আবার অনেকেরই সাইফুলের মতো যন্ত্রণা থেকে যায়।
এসআর/আরএইচ