ভাষা শহীদদের স্মরণে হাতে-মুখে একুশের আলপনা

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:২২ পিএম


ভাষা শহীদদের স্মরণে হাতে-মুখে একুশের আলপনা

শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসেছেন ছাত্র-শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। শ্রদ্ধা জানাতে এসে ভাষা প্রেমীদের অনেকেই সেজেছে বাহারি আলপনায়। তাদের কারো মুখে, হাতে দেখা গেছে অমর ২১, বাংলা বর্ণ এবং শহীদ মিনারের ছাপ। কচি-কাচাদের মুখে অমর একুশে কিংবা বাংলা বর্ণমালার ছাপ যেন রফিক, শফিক, সালাম আর বরকতদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে নতুন রূপে। 

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র।

dhakapost

ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে আসা শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীরা তাদের মুখে-হাতে আলপনা এঁকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। রঙ-তুলি হাতে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে, বিভিন্ন পয়েন্টে আলপনা এঁকে দেওয়ার জন্য আলপনা শিল্পীদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে।

বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থেকে শহীদ মিনারে আসা তরুণ-তরুণীরা যেমন ভিড় জমাচ্ছেন তেমনি বাদ যায়নি বয়স্করাও। তাদের কেউ কেউ শখের বসে আলপনায় নিজেকে সাজিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ করছেন। প্রতিটি আলপনা আঁকতে গুণতে হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। ক্ষেত্র বিশেষ টাকার এই পরিমাণ কিছুটা কম-বেশি হয়ে থাকে। 

dhakapost

অভিভাবকদের সঙ্গে আসা শিশুদের অনেকেই গুনগুন করে গাইছেন ভাষার গান। কেউ কেউ আবার আবৃত্তি করছে ‌‘অ-আ-ক-খ’। একুশের শোক আর শিশুদের এই সুর যেন বলে উঠছে ভাষা শহীদরা এদের মাঝেই বেঁচে রয়েছেন। বেঁচে থাকবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম।

রাজধানীর পান্থপথ থেকে এসে আলপনা এঁকেছেন হুমায়রা আনজুম। তার সঙ্গে কথা হলে বলেন, একুশের চেতনাকে ধারণ করতে আলপনা এখন আর দেয়ালে, মেঝেতে বা রাস্তায় সীমাবদ্ধ নেই। আলপনা আঁকা হচ্ছে মানুষের দেহেও। বাঙ্গালি জাতিসত্তার যা কিছু বড় অর্জন সেগুলোর ভীত এই ভাষা শহীদরাই রচনা করেছেন। তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতেই মুখে আলপনা এঁকেছি।

dhakapost

শিশু-কিশোরদের হাতে-মুখে আলপনা এঁকে দেওয়া শাহরিয়ার হিমেল বলেন, একুশ আমাদের মুখের ভাষার প্রথম দ্রোহ, গর্জন আর প্রতিবাদের প্রথম পদক্ষেপ। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে রাজপথ রক্তাক্ত করা এক অধ্যায়ের সমাপ্তি শেষ করে উন্মোচিত হয়েছিল আমাদের নিজের ভাষায় কথা বলার অধিকার। এ অধিকার একই সঙ্গে 
গৌরব, ঐতিহ্য সংগ্রাম, সাফল্য ও আবেগের। এ আলপনায় ফুটে ওঠে সেই আবেগ, সেই স্মৃতি। শোককে শক্তিতে পরিণত করার সেই অনুভূতি। 

দুই বছরের বাচ্চা নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন রুহুল-ফারিয়া দম্পতি। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে রুহুল আমিন বলেন, এই দিবসে ছোটবেলায় খুব ভোরে খালি পায়েই বের হতাম ফুল নিয়ে। গ্রামে বিভিন্ন বাড়ির ফুল নিয়ে রাতেই মালা বানিয়ে রাখতাম। মহান ভাষা শহীদদের স্মরণে এমন চর্চা শহরে কম। তবে আলপনা এঁকে আমাদের ইতিহাসের সঙ্গে এ প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার বিষয়টা দারুণ। আমার বাচ্চাকে আলপনায় সাজিয়েছি। জীবনবোধ আর দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার চর্চা এই ছোটবেলা থেকেই শুরু হোক। 

এমএম/এমএ

Link copied