সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে : নৌ প্রতিমন্ত্রী

দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি এবং চলমান বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি) আয়োজিত বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
খালিদ মাহমুদ বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশ যখন পদ্মাসেতু করছে, অনেকে মানতে পারছে না। দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর, মহাসড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। করোনার মধ্যে আমাদের রিজার্ভ যখন ৪৩ বিলিয়ন ডলার তখন অনেকে সেটা মেনে নিতে পারছেন না। সেটার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ নেওয়ার কারণে সাংবাদিকদের বিদ্রূপ করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু সবার, বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার কোনো সুযোগ নেই। পঁচাত্তরের পর বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তার খুনিদের মঞ্চে বসানো হয়েছিল। কিন্তু তাকে হত্যা করা যায়নি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা দুনিয়া পালন করছে। করোনার মধ্যেও একের পর এক সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা বাংলাদেশে আসছেন। সেটা নিয়েও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিনি যেন আসতে না পারেন, সেজন্য সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জে আপনারা দেখেছেন, কী ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ধরনের আরও ঘটনা ঘটানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে সজাগ থাকতে হবে। আপনারা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে, বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলবেন। এখানে লজ্জার কিছু নেই। এটা গর্বের ও অহংকারের।
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার চিন্তা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও ইতিহাস তুলে ধরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সালেই বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকার-স্বাধীনতার কথা চিন্তা করেছিলেন। সেই জায়গা থেকে চিন্তা-ভাবনা করে তদানীন্তন পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কমরেড মনি সিংহকে ১৯৫৩ সালে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি বাংলার স্বাধীনতার কথা চিন্তা করছি। বঙ্গবন্ধু ২৩ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছেন দেশের ভূখণ্ডের স্বাধীনতার জন্য। বাংলাদেশের মানুষ যখন (১৯৭০) তাকে ম্যান্ডেট দিয়েছে, তখন তিনি বলেছিলেন, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমি বাংলার মানুষের স্বাধীনতা চাই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতবর্ষের মহান বিপ্লবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী সুভাষ চন্দ্র বসু বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’; আর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব’। পাকিস্তান থেকে ফিরে এসে তিনি বলেছিলেন, ‘রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতির ঋণ শোধ করব।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু গণতান্ত্রিক একটি আন্দোলনকে ৭ মার্চের ভাষণের পর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পরিণত করেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা। কাজেই বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা এক এবং একাকার। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মামুন ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল মোমেন মিল্টন, প্যান্টাগন ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অন্তু করিম প্রমুখ।
এমএইচএন/ওএফ