প্রত্নস্থল সংরক্ষণে চীনের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশের প্রত্নস্থল সংস্কার-সংরক্ষণে চীনের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। রোববার (২ এপ্রিল) সচিবালয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। সাক্ষাৎকালে প্রতিমন্ত্রী এ সহযোগিতা চান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে মোট ৫০৯টি পুরাকীর্তি বা প্রত্নস্থল রয়েছে। এসব পুরাকীর্তির সংস্কার-সংরক্ষণে চীন প্রযুক্তিগত ও কারিগরিভাবে সহযোগিতা করতে পারে। এক্ষেত্রে চীন তাদের প্রত্নতত্ত্ববিদ ও প্রত্ন-বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব সেক্টরে দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোক তৈরিতে সহযোগিতা করতে পারে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের পুরাকীর্তিগুলোর সংস্কার-সংরক্ষণে প্রশিক্ষণ দেওয়া ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
তিনি বাংলা একাডেমি ও চাইনিজ ন্যাশনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেন।
এ ইস্যুতে প্রতিমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে সামান্য মতভেদ রয়েছে এবং সেটি নিরসন হলে দ্রুত এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
সাক্ষাতে বন্ধু প্রতিম দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদারকরণের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, নাটেশ্বর ও পানাম সিটি সংস্কার-সংরক্ষণ, বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ নির্মাণে সহযোগিতাসহ সাংস্কৃতিক অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, সংস্কৃতি দুই দেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের অন্যতম ভিত্তি। কোভিডের কারণে বিগত ২-৩ বছর যাবত সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তিনি সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম জোরদারকরণের আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ২০২২ সালের ৭ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালীন সময়ে দুই দেশের মধ্যে ২০২৩-২০২৭ মেয়াদে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
তিনি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীকে আগামী ২৪-২৬ এপ্রিল মেয়াদে এশিয়া মহাদেশের ৩০টি দেশের অংশগ্রহণে চীনের শিয়াংয়ে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন এসিএইচএ কনফারেন্সে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে এসিএইচএ সম্মেলনে অংশগ্রহণের বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন। কে এম খালিদ মুন্সীগঞ্জের নাটেশ্বর প্রত্নস্থল পার্ক নির্মাণের পাশাপাশি সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত পানাম সিটির সংস্কার-সংরক্ষণে চীনের সহযোগিতা কামনা করেন।
তাছাড়া তিনি সিডনি অপেরা হাউজের আদলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প 'বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ' নির্মাণেও চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা কামনা করেন।
সাক্ষাৎকালে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব কাজী নুরুল ইসলাম ও আয়েশা সিদ্দিকা, ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের শিক্ষা উপস্থিত ছিলেন।
এসএইচআর/এসকেডি