মালবাহী ট্রেনে সোনার বাংলার ধাক্কা 

স্টেশন মাস্টারের পাশাপাশি চালকেরও দোষ দেখছে রেলওয়ে

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:১৩ পিএম


স্টেশন মাস্টারের পাশাপাশি চালকেরও দোষ দেখছে রেলওয়ে

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সোনার বাংলা ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে নেমেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এ দুর্ঘটনায় স্টেশন মাস্টার মো. সোহাগ ও সোনার বাংলা ট্রেনের চালক দুজনেরই গাফিলতি রয়েছে।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে মালবাহী ট্রেনটি প্রথমে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে হাসানপুর রেলস্টেশনে পৌঁছায়। ওই সময় ট্রেনটিকে লুপ লাইনে (চার নম্বর লাইন) দাঁড় করানো হয়। কিছুক্ষণ পর সোনার বাংলা ওই স্টেশনে পৌঁছালে দুটি ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। যেহেতু স্টেশন মাস্টার মালবাহী ট্রেনকে লুপ লাইনে দাঁড় করিয়েছেন সেহেতু পয়েন্ট মেশিন প্রধান লাইনের সঙ্গে যুক্ত করা দরকার ছিল।

আবার স্টেশন এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকা এবং ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় সিগন্যাল সিস্টেম অকার্যকর ছিল। এজন্য স্টেশন মাস্টার চাইলে দায়িত্বরত কাউকে দিয়ে সোনার বাংলা ট্রেন থামানোর উদ্যোগ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তাও করেননি।

এছাড়া সোনার বাংলা ট্রেন স্টেশনে ঢুকার সময় গতি ছিল প্রায় ৭০ কিলোমিটার। যেহেতু ট্রেনচালক স্টেশনের সিগন্যাল লাইট বন্ধ দেখেছেন এবং ট্রেন ঢোকার সময় কোনোরকম সংকেত পাননি, এজন্য তিনি চাইলে ধীরে স্টেশন ক্রস করতে পারতেন। এক্ষেত্রে অন্তত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হত বলে ধারণা রেল কর্মকর্তাদের।

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দুর্ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রেলওয়ের তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা তারেক মো. ইমরান, বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) মো. জাহিদ হাসান, বিভাগীয় সংকেত প্রকৌশলী জাহেদ আরেফিন পাটোয়ারি তন্ময় ও বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ এম এ হাসান মুকুল।

গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী একটি মালবাহী ট্রেন কুমিল্লার হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপেক্ষমাণ থাকা অবস্থায় সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে ধাক্কা দেয়। এতে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এ ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রেনের ২০-৩০ জন যাত্রী আহত হন।

দুর্ঘটনার পর চারজনকে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তারা হলেন- সোনার বাংলা ট্রেনের গার্ড আব্দুল কাদের (চট্টগ্রাম ডিভিশন), লোকোমাস্টার মো. জসিম উদ্দিন (ঢাকা হেডকোয়ার্টার), সহকারী লোক মাস্টার মো. মহসিন (ঢাকা হেডকোয়ার্টার)  ও হাসানপুর স্টেশনের মেইনটেইনার সিগন্যাল ওয়াহিদ।

এমআর/এসকেডি 

Link copied