এলএসডি সেবনের সঙ্গে জড়িত মন্ত্রীর এপিএসের শ্যালক গ্রেপ্তার

ভয়ঙ্কর মাদক এলএসিডর সেবনের ও বিদেশ থেকে অর্ডার করে নিয়ে আসার তদন্তের সূত্র ধরে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) মফিজুর রমানের বাসায় অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। সেই বাসা থেকে মফিজুর রহমানের শ্যালক ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করে ডিএনসি।
এর আগে একই ঘটনার সূত্র ধরে রাজধানীর গুলশানে জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদের ছেলে আযরাফ আহমেদ ওজিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র মতে জানায় যায়, এই দুই জন ব্যক্তির পরিবারের লোকজন প্রভাবশালী হওয়ার তাদের কাছে এলএসডি পাওয়ার পরেও ছেড়ে দেওয়া হয়। গাঁজা পাওয়া গেছে এই মর্মে অভিযোগ এনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের একদিনের সাজা দিয়ে ছেড়া দেওয়া হয়।
ডিএনসি সূত্রে জানা যায়, গয় ৯ মে নেদারল্যান্ডস থেকে রাজধানীতে ডাকযোগে একটি সন্দেহজনক পার্সেল ঢাকায় আসে। পার্সেলে প্রাপকের ঠিকানায় নাম ছিল ফারদিন নামে এক ব্যক্তির। তবে পার্সেলটি কেউ নিতে না আসায় বিষয়টি ডাক বিভাগ ডিএনসিকে জানায়। পরে ডিএনসি পার্সেলটি খুলে দেখে ২৫টি এলএসডি ব্লটার পায়।
পরে পার্সেলটির মালিককে ধরতে গুলশান পোস্ট অফিসের সামনে অবস্থান নেয় ডিএনসির কর্মকর্তারা। সর্বশেষ গত ১৫ মে এই পার্সেলটি নিতে আসেন শাফিন আহমেদের ছেলে আযরাফ আহমেদ ওজি। এ সময় ডিএনসির কর্মকর্তারা সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক করে।
আটকের পর সে ডিএনসির কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানান, পার্সেলটি তার না। তার বন্ধু ফারদিনের হয়ে তিনি সেটি নিতে এসেছে। এরপর ফারদিনকে ওজির মাধ্যমে ডাকিয়ে এনে তাকেও আটক করে ডিএনসি। পরে ফারদিন জিজ্ঞাসাবাদে ইব্রাহিম কিবরিয়া নামে এক যুবকের নাম বলেন। তার দেওয়া তথ্য মতে আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশনের অফিসের সামনে থেকে ইব্রাহিমকেও আটক করা হয়।
আরও জানা গেছে, এই তিন জনকে আটকের পর তাদের দেওয়া তথ্য মতে শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস মফিজুর রহমানের বাসায় অভিযান চালান ডিএনসির কর্মকর্তারা। সেখান থেকে এমডিএমএ (মেথাইলিন ডক্সি মেথা এমফিটামিন) জব্দ করা হয়। পরে আটক তিন জনকে ডিএনসির সেগুনবাগিচার সদরদপ্তরে আনা হয়। তারা ১৫ তারিখ রাতে ওখানেই ছিলেন।
ডিএনসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ১৬ মে ওজির বাবা ও ইব্রাহিমের বোনজামাই শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস ডিএনসি সদর দপ্তরে আসেন। সেখানে তাদের প্রভাবশালী তদবিরের কারণে ওজি ও ইব্রাহিমের কাছে ১০ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে মর্মে অভিযোগ এনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের ১ দিনের সাজা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ১৫ তারিখের রাতকে সাজা হিসেবে ধরা হয়। অন্যদিকে ফারদিনের জন্য প্রভাবশালী কারো ফোন না আসায় তাকে আসামি করে ১৬ মে এলএসডি উদ্ধারের ঘটনায় পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ রিফাত হোসেব বলেন, ফারদিনকে এলএসডিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে শিক্ষামন্ত্রীর এপিএসের শ্যালক ও ওজিকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু তাদের কাছে কোনো এলএসডি পাওয়া যায়নি।
এমএসি/এসএম