বিসিএস পরীক্ষা : দেরিতে বের হলেন প্রধানমন্ত্রী

সকাল ১০টায় রাজধানীর আশকোনার হজ অফিসে ‘হজ কার্যক্রম-২০২৩’ উদ্বোধন এবং হজ যাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে পৌঁছানোর কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। কিন্তু সকালে ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা থাকায় পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে দেরিতে অনুষ্ঠানে যান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে দেরি হওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি পৌনে ১০টাই রেডি ছিলাম। পরে শুনলাম পরীক্ষা আছে, আমি গেলে তো রাস্তা বন্ধ করে দেবে, তারা সময় মতো পরীক্ষা দিতে পারবে না। সেই জন্য আমাকে দেরি করতে হলো।
বক্তব্যে হজযাত্রীদের বাংলাদেশের জন্য দোয়া করার আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা। হজযাত্রীরে উদ্দেশে তিনি বলেন, হজ পালন কালে বাংলাদেশের উন্নতি, সমদ্ধির পথে যেন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে, বাংলাদেশের মানুষের যেন আর দুঃখ-কষ্ট ভোগ করতে না হয়, সেই দোয়াটা আপনারা আল্লাহর কাছে করবেন। এটা আপনাদের কাছে আমার আবেদন থাকবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্য সুষ্ট দুর্যোগও হয়, অগ্নিসন্ত্রাস হয়, বাসের মধ্যে আগুন দিয়ে মানুষ মারে, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ মারে। মনুষ্য সৃষ্ট দুযোর্গ বা প্রাকৃতিক দুযোর্গ, কোনো দুযোর্গই যেন বাংলাদেশকে ক্ষতি করতে না পারে, বাংলাদেশের মানুষের ক্ষতি করতে না পারে আপনারা সেই দোয়াটা করবেন।
তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত আন্ডারপাস
তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন থেকে এয়ারপোর্টের পর্যন্ত আন্ডারপাস তৈরি করা হবে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন এবং এয়ারপোর্টের মধ্যে একটা আন্ডারপাস তৈরি করে দিচ্ছি। এই আন্ডারপাস খুব আধুনিক হবে। এখানে মালপত্র ঘাড়ে করে টানতে হবে না। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্ল্যান করা হয়েছে। ডিজাইন করা হয়েছে। এটা হয়ে গেলে আরও সহজ হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ১টি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ইতোমধ্যে ২০০টি মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছে। আমরা জাতীয় শিক্ষা নীতিতে নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করেছি এবং মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমকে জাতীয় শিক্ষা নীতির অন্তর্ভুক্ত করেছি। মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ২১ লাখ ৫১ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রাক-প্রাথমিক, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৭৫ হাজার ৮৮৩ জন আলেমের সম্মানীর ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের সুব্যবস্থা করেছি।
• আরও পড়ুন : ভেতরে পরীক্ষা, বাইরে প্রার্থনা-উৎকণ্ঠা
শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। সামান্য কিছু মানুষের জন্য বদনাম সৃষ্টি হয়, যারা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস করে। আসলে জঙ্গিবাদ যারা করে তাদের কোনো ধর্ম নেই। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সব ধরনের ধর্মের মধ্যে আছে। নিরীহ মানুষকে হত্যা করে বেহেস্তে যাবে এটা কোনো দিন হয় না। আল্লাহ তায়ালা কখনো এটা বলেননি। এখান থেকে যাতে সবাই বিরত থাকে সকলকে উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজ ব্যবস্থাপনার গুরুদায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করে চলেছে। হজ ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ডাক্তার, নার্স, ব্রাদার্স, আলেম-ওলামা, গাইড ও সংশ্লিষ্ট যারা যাত্রীদের সেবায় নিয়োজিত আছেন; আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান ও নির্দেশনা হলো হজ যাত্রীদের সেবায় যেন কোন প্রকার গাফিলতি না হয়। আর এ বছর হজযাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন। হজ যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির আরও কারণ হলো আমরা বাংলাদেশকে সুদৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে পেরেছি, মানুষের আয় ও জীবন-মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সংসদ সদস্য হাবিব হাছান, ধর্ম বিষয়ক সচিক কাজী এনামুল হাসান এনডিসি, ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম প্রমুখ।
এমএসআই/এনএফ