জাপান বাংলাদেশকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করবে

বাংলাদেশের জাপানি বন্ধু তাকাশি হাওয়াকাওয়ার ছেলে ওসামু হাওয়াকাওয়া বলেছেন, এশিয়ার দেশ হিসেবে মানবতার ভিত্তিতে জাপান বাংলাদেশকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করবে। রবীন্দ্রনাথ যে ‘সোনার বাংলা’র কথা বলেছেন, তা গড়ার উদ্দেশ্যে এশিয়ার দেশ হিসেবে মানবতার ভিত্তিতে জাপান বাংলাদেশকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করবে।
শুক্রবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর নবম দিনের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ওসামু বলেন, ‘১৯৭২ সালের ১৪ মার্চে, যখন আমার বাবা জাপান সরকারের বিশেষ মৈত্রী দূত হিসেবে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। আমিও বাবার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলে ছিলাম। সেই সময় সারা বাংলাদেশ ছিল শিকল ভাঙার সুখ ও স্বাধীনতা অর্জনের আনন্দে পরিপূর্ণ। চার দিনের অবস্থানকালে সেটি প্রত্যক্ষ করে বাবাও অত্যন্ত অভিভূত ও আবেগাপ্লুত হয়েছিলেন। স্বাধীনতা অর্জনের আর কিছু দিনের মধ্যেই ভীষণ ব্যস্ততা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু তার কার্যালয়ে আমাদের আমন্ত্রণ করলেন। বাবার সঙ্গে দেখা হলে তিনি বাবাকে আন্তরিকভাবে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।’
ওসামু আরো বলেন, আমরা দেখলাম, দেশের স্বাধীনতার জন্য উৎসর্গীকৃত জীবনের অর্ধেক কারাগারে কাটাতে বাধ্য হলেও বঙ্গবন্ধু ছিলেন সদা উজ্জ্বল ও উষ্ণ মনের অধিকারী। বাবা (তাকাশি) বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য অভিনন্দন জানানোর পর তারা বৈঠকে বসেন এবং রাষ্ট্র গঠনে উৎসাহী দুই নেতার মধ্যে আন্তরিক আলোচনা যেন শেষ হতে চায়নি। তাদের মনের আবেগ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বললেন যে, বাংলাদেশকে পূর্ব ও পশ্চিম দুই ভাগে বিভক্তকারী যমুনা নদীতে সেতু নির্মাণের কাজ যেন জাপানের হাতে সম্পন্ন হয়। তিনি আগ্রহের সঙ্গে আরও বলেন, সেই সেতু হবে বাংলাদেশ ও জাপানের বন্ধুত্বের প্রতীক।
তিনি বলেন, এই সফরকালে আমরা বাংলাদেশ ঘুরে দেখার সুযোগ পাই। সদ্য শেষ হওয়া যুদ্ধের ক্ষত রয়ে গিয়েছিল সব জায়গাতেই। কল্পনাতীত ধ্বংসযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করে বাবা অত্যন্ত মর্মাহত হন। দেশে ফেরার পর আমার বাবা যমুনা সেতু নির্মাণে সহায়তা প্রদান ও জাপানের দেয়া অন্যান্য প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের প্রয়াস নেন। এরপর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে জাপানের সহযোগিতায় অনেক বড় বড় সেতুর নির্মাণসহ অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে জাপানে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হবে। বাবা জীবিত থাকলে দু’দেশের মধ্যে মৈত্রী বিনিময়ের একজন ভিত্তি স্থাপনকারী হিসেবে এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বছরকে অত্যন্ত আগ্রহের সাথে গ্রহণ করতেন।’ ওসামু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবরূপ লাভ করবে এবং আপনার দেশ বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য অধিকতর অবদান রাখবে।
সূত্র : বাসস।
এনএফ
