রাজধানীজুড়ে গণপরিবহন সংকট

রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় যাত্রীবাহী বাসসহ গণপরিবহনের সংকট দেখা দিয়েছে। ইসলামী সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ, প্রতিবাদসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন এবং রোববার (২৮ মার্চ) হেফাজতে ইসলামের হরতাল কর্মসূচি ঘোষণার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে ভিআইপি চলাচলের ফলে বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল শুক্রবার (২৬ মার্চ) থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। যে কারণে সড়কে যানবাহন কম থাকায় লোকজনকে গন্তব্যে যেতে ভোগান্তির পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
বিকেলে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মৎস্য ভবন থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভিআইপি মুভমেন্ট ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক রাখতে পুলিশ যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেছে। এসব এলাকার সড়কে গণপরিবহন নেই বললেই চলে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচলেও পুলিশের কড়াকড়ি দেখা গেছে।
পুরানা পল্টনে বাসের তুলনায় মোটরসাইকেল ও রিকশার আধিক্য বেশি। পল্টন মোড়ে বাসে ওঠার অপেক্ষায় থাকা সাইফুল আজম বলেন, গুলিস্তান থেকে হেঁটে এখানে এসেছি। কাকরাইলেও বাস না পেয়ে অনেকে মোটরসাইকেলে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। সদরঘাট এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে রওনা দেওয়া আরোহী আনোয়ার হোসেন বলেন, সড়কে বাস অন্যান্য দিনের চেয়ে কম।
সকাল থেকেই রাজধানীর ফার্মগেট, মিরপুর-১০, মিরপুর-১, শ্যামলী, প্রগতি সরণি, মালিবাগ, পল্টন, মতিঝিল, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন স্থানে বাস ও মিনিবাসের সংকট দেখা দেয়। ফলে যাত্রীরা বাস না পেয়ে বিকল্প পরিবহনে বেশি ভাড়ায় চলাচল করতে বাধ্য হন।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিরপুর-মতিঝিল রুটসহ বিভিন্ন রুটের বাসগুলোর বড় অংশই চলাচলের জন্য সড়কে নামানো হয়নি। এছাড়া সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, মহাখালী বাস টার্মিনাল ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকেও ঢাকার বাইরে সীমিত বাস ছেড়েছে।
পল্টনে বাসের জন্য দুপুর ২টা থেকে অপেক্ষা করে উত্তরা যেতে ৪শ টাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন ব্যবসায়ী ফয়েজ আহমেদ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুর্ভোগে পড়েছি, সুযোগ পেয়ে চালকরা বেশি ভাড়া নিচ্ছে।
মিরপুর থেকে মতিঝিল রুটে চলাচলকারী বিকল্প পরিবহনের বাস থেকে শেওড়াপাড়া নেমে পাশের সংযোগ সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন সোহরাব হোসেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, হঠাৎ করে বাস থামিয়ে দিলো, কী করব? তাই হাঁটছি।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দফতর সম্পাদক সামদানী খন্দকার বলেন, বিভিন্ন স্থানে ইসলামি সংগঠনগুলোর কর্মসূচির ফলে বাস চালকরাও ঝামেলা এড়াতে কোনো কোনো রুটের গাড়ি বন্ধ রেখেছেন। তবে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জরুরি সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামীকাল ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় গাড়ি চালানোর। হেফাজতে ইসলাম আগামীকাল সারাদেশে হরতাল পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, গণপরিবহনের সংকটের বড় কারণ রাজধানীর বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি। এছাড়া নাশকতার ভয়েও অনেকে বাস চালাচ্ছে না।
পিএসডি/এমএসি/জেডএস/এমএমজে