ছাগলে ‘পাগল দশা’ ক্রেতার, বিক্রেতার দাবি দাম কম

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে পুরোদমে জমে উঠেছে গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট। ঈদের দু’দিন আগে আজ ক্রেতা সমাগম যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে কোরবানির পশু কেনা-বেচা। ক্রেতারা বলছেন, গাবতলী পশুর হাটে ছাগলে পাগল দশা। আকাশচুম্বী দাম হাঁকানো হচ্ছে।
তবে বিক্রেতারা বলছেন, ছাগলের দাম গরুর তুলনায় কম। গত বছরের মতোই দাম হাঁকানো হচ্ছে। বড় ছাগলের চেয়ে মাঝারি ও ছোট ছাগলই বেশি কিনছেন ক্রেতারা।
সোমবার (২৬ জুন) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সরেজমিনে গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট ঘুরে জানা গেছে, হাটে দেশি ছাগলের চাহিদা বেশি। অনেক ক্রেতাই কিনছেন একাধিক খাসি। কেউ আবার দরদাম করে বেশি দামের কারণে ঘুরছেন ফিরছেন।

হাটে কথা হয় গোপালগঞ্জের ব্যাপারি মো. নূরে আলম মিয়ার সঙ্গে। তার দাবি, কোরবানির ছাগলের দাম আগের মতোই। কিন্তু বেশিরভাগ ক্রেতা শুধু দরদাম করছেন।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রামছাগল কিনে এই হাটে এনেছি লাভের আশায়। ২৩টা খাসি এনেছি। কয়েকটা বিক্রি হয়েছে, বড়গুলোই রয়ে গেছে।
পাবনা থেকে আসা ব্যাপারি আজিজ মিয়া বলেন, হাটে ছোট ও দেশি ছাগলের চাহিদা বেশি। আমার বেশির ভাগ ছাগলই মাঝারি ও ছোট সাইজের। বেচাবিক্রিও তাই বেশি।
কুষ্টিয়ার ব্যাপারি রোসনাই মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইন্ডিয়ান পাতনাই জাতের ছাগল এনেছি। ৪০ থেকে ১৬০ কেজি পর্যন্ত ওজনের ছাগল এনেছি। ১৬০ কেজি ওজনের একটা ছাগল বিক্রি করছি ১ লাখ ৩০ হাজারে। ২৪০টা খাসি এনেছিলাম। ৮০টা আছে। দাম মোটামুটি আছে। ৯০ থেকে ১০০ কেজি ওজনের ছাগলই এখন বেশি। দাম সব সোয়া লাখ হাঁকাচ্ছি। ৯০ হাজারে বিক্রি হলেও লাভ।

দাম নিয়ে জানতে চাইলে পুরান ঢাকা থেকে গাবতলী হাটে আসা ক্রেতা সানি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকে ঘুরছি। দামে শুনে পাগল দশা। লেগে থাকলে মিলছে নইলে মিলছে না। ক্রেতা সমাগম বাড়ায় বিক্রেতারা অনেক বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন। ১৫ কেজি ওজনের খাসির দাম চাইছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, খাসি কিনে তারপর গরুর হাঁটে ঢুকব ভাবছিলাম। কিন্তু খাসিই তো দামে মেলাতে পারছি না।
মিজানুর নামে আরেক ক্রেতা ১৭ হাজারে খাসি কিনে ফেরার পথে ঢাকা পোস্টকে বলেন, দাম অনেক বেশি। অনেক দর কষাকষির পর এই খাসির দড়ি হাতে নিতে পারছি ১৭ হাজারে। যদিও এটার দাম ১৪/১৫ হাজারের বেশি হবে না।

হেমায়েতপুর থেকে আসা বিক্রেতা খায়রুল বলেন, বাজার জমবে, এখনো হাটে খাসির ক্রেতা কম। তাই ছাগল ছাড়ছি না, গরু কেনা হলে ক্রেতা সব আসবে ছাগল কিনতে। লাভের আশায় এখনো দড়ি হাতের মুঠোয় রাখছি।
বাবার সঙ্গে হাটে এসেছেন শাহী নামে যুবক। শাহী বলেন, ১০টা ছাগল কিনছি একসঙ্গে। দাম সব একসঙ্গে করছি। দেড় ঘণ্টার দর কষাকষি শেষে মিলেছে। একেকটার দাম ১৫ হাজার করে।
মাসুদুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, ঘুরছি, দামে মেলে কিন্তু পছন্দে সেটা মিলছে না। আবার পছন্দ হলে সেটার দাম বাজেটের বাইরে। ভাবছি কাল আবার আসব। দাম কমবে নয়তো বাড়বে। ছাগল তো কেনাই লাগবে।
জেইউ/এসএসএইচ/