গাবতলী হাটে মাঝারি গরুর টান, কাল থেকে বড় গরু বিক্রির প্রত্যাশা
পুরোদমে জমে উঠেছে গাবতলীর কোরবানির পশুর হাট। কাদা-বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাটে আসছেন ক্রেতারা। হাটে ছোট গরুর সঙ্গে টান পড়েছে মাঝারি সাইজের গরুর। ব্যাপারিদের প্রত্যাশা, আগামীকাল (বুধবার) থেকে বড় গরুর বিক্রি বাড়বে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাবতলী পশুর হাট সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ট্রাক ও পিকআপে গরু আনা হচ্ছে। হাটে ঢুকতে ও বের হওয়ার সময় ক্রেতা, বিক্রেতা ও রাখালদের গরু টানা-হেঁছড়ায় জটলা লেগে থাকছে। হাটে বেড়েছে মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা। আড়াই থেকে সাড়ে চার লাখ টাকার গরু বিক্রির ধুম চলছে।
এদিকে গরু রাখার সেডে সেডে ঘুরছেন ক্রেতারা। দরদাম করে কিনছেন গরু। ক্যাশ টাকায় গরুর মূল্য পরিশোধের পর অনেক ক্রেতাকে হাসিল ধরের সামনে লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
বড় গরু বিক্রি কেন কম হচ্ছে, জানতে চাইলে রাজবাড়ী থেকে তুফান ও কালা বাহাদুর নামে দুটি গরু হাটে আনা ব্যাপারী আব্দুল ওয়াহাব মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, লাল রঙের শাহীওয়াল জাতের তুফান বিক্রি করেছি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। আছে কালা বাহাদুর। শুরুতে দাম হাঁকিয়েছিলাম ৮ লাখ। ক্রেতা মিলছিল না। এখন দাম চাচ্ছি ৬ লাখ। ৫ লাখ পর্যন্ত দাম উঠেছে। অপেক্ষায় আছি কাল হয়ত বেচে দেবো।
বিজ্ঞাপন
আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ১০ ফুট লম্বা কালা বাহাদুর নিজের ঘরে লালনপালন করেছি সাড়ে চার বছর। ওজন ৩০ থেকে ৩২ মণ ওজনের অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের এ গরুর প্রতি অনেক আবেগ জড়িত।
পাশেই একদল ক্রেতার সঙ্গে গরুর দম-দামে ব্যস্ত দেখা যায় ব্যাপারি ফারক মিয়াকে। সাড়ে ৪ লাখের গরু দর-দামে নেমে ৩ লাখ ৫৬ হাজারে বিক্রি করে দেন তিনি।
টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরে নিজের খামার থেকে শতাধিক ইন্ডিয়ান হরিয়ানা জাতের গরু এনেছিলেন ব্যাপারী ফারুক মিয়া। তিনি বলেন, আর মাত্র ২৮টি গরু আছে। সাড়ে ৩ থেকে ৬ লাখ পর্যন্ত দামে নানা সাইজের গরু বিক্রি করছি। এখন যা আছে সব সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ লাখের মধ্যে।
মিরপুর থেকে আসা ক্রেতা রিয়াদ বলেন, ভেবেছিলাম বড় গরু কিনব। কিন্তু দামে মিলছে না। তাই মাঝারি গরুতে নজর দিয়েছি। মিলে গেলো সাড়ে ৩ লাখের মধ্যেই।
কেরানীগঞ্জের ব্যাপারি আসাদুল ইসলাম বলেন, ১৭টি গরু নিয়ে এসেছিলাম। এর মধ্যে বড় দুটো গরুই রয়ে গেছে। লাল নেপালি জাতের গরুর দাম হাঁকিয়েছি ৫ লাখ টাকা। সাড়ে ৪ লাখে বেচে দিতে পারলে খুশি মনে হাট ছাড়ব।
অন্যদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, অনেক বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা৷ বড় গরুর ক্রেতা থাকলেও দামের কারণে কেনা যাচ্ছে না।
সবুর মিয়া নামে আদাবরের এক ক্রেতা বলেন, ছোট গরুর দামও যেন নাগালের বাইরে। সোয়া লাখের গরু কিনতে হলো দেড় লাখে।
গাবতলী অস্থায়ী পশুর হাটের ম্যানেজার আবুল হাশেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাসিল ঘরের সামনে ভিড় বাড়ছে। মাঝারি গরুর হাসিল বেশি আসছে। বড় গরুর ক্রেতা এখনো কম। বড় গরুর হাঁকানো দাম কমে আসছে। কাল-পরশু ক্রেতা আরও বাড়বে।
বড় গরু বিক্রি কমার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, বড় গরু রাখা কষ্ট, হাট থেকে বাসা পর্যন্ত নেয়াও কষ্ট। সেজন্য ক্রেতারা শেষের দিকে এসে নজর দেন বড় গরুতে। অনেক ক্রেতা বড় গরু কিনলেও হাটেই রেখে গেছেন। ঈদের আগের রাতে নিয়ে যাবেন।
জেইউ/কেএ