যাত্রীতে ঠাসা উত্তরের ট্রেনগুলো

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৭ জুন ২০২৩, ১১:০৩ পিএম


যাত্রীতে ঠাসা উত্তরের ট্রেনগুলো

কমলাপুর রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে মানুষ আর মানুষ। সবার লক্ষ্য উত্তরের ট্রেন দ্রুতযান। ট্রেনটির ঢাকা ছাড়ার সময় ছিল রাত ৮টা। তার আগে থেকেই যাত্রীরা অপেক্ষায়। ট্রেনও প্ল্যাটফর্মে আসে সময় মতোই।

তারপর যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা যায়। যাদের আসনের টিকিট আছে তারা যেমন দ্রুত ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করেন, তেমনই যাদের আসনের টিকিট নেই তারাও ব্যস্ত হয়ে পড়েন ট্রেনের ছাদে উঠতে। কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায়, উত্তরবঙ্গের এই ট্রেন পুরোপুরি যাত্রীতে ঠাসা। ট্রেনটি ৯টা ৫১ মিনিটে কমলাপুর ছেড়ে গেছে।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) রাতে কমলাপুর স্টেশনে ঘরেফেরা মানুষের এমন চিত্র দেখা গেছে। এরপর রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা রয়েছে রাত ১১টায়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগে থেকেই যাত্রীরা প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নিয়েছেন উত্তরের আরেক ট্রেনের জন্য।

জীবিকার তাগিদে সারা দিন কাজ আর কাজ। একঘেয়েমি জীবন। আর এ একঘেয়েমি জীবনে সাময়িক বিরতি দিয়ে কর্মজীবী এসব মানুষের সামনে আসে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মুহূর্ত। প্রিয়জনের সঙ্গে আনান্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার ঐতিহ্য বাঙালির দীর্ঘদিনের। তাই তো শত ভোগান্তি আর বিড়ম্বনা পেরিয়ে মানুষ ছুটে নাড়ির টানে। পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বা প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে সবার ব্যস্ত ছুটে চলা। কমলাপুর রেল স্টেশনে চারদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। এ যেন জনস্রোত। প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতেই সবার এই ছুটে চলা।

টিকিটের অপ্রতুলতা, বিলম্বে ট্রেন ছাড়াসহ নানা ভোগান্তি আর বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে যারা রাজধানী ছাড়ছেন তাদের চোখে-মুখে ছিল ঘরেফেরার উচ্ছ্বাস।

dhakapost

উত্তরের দ্রুতযান ট্রেনে দিনাজপুর যাবেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুস সাত্তার। কিন্তু টিকিট প্রদানের নির্ধারিত দিনে অনলাইনে তিনি টিকিট পাননি। যে কারণে আজ স্টেশনে এসে স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটেছেন।

তিনি বলেন, ট্রেনে এত ভিড়, ছাদ, বগি, গেট কোথাও ফাঁকা নেই। খুব চেষ্টা করে ট্রেনে উঠতে হচ্ছে। কোনোমতে ট্রেনের গেটের কাছে দাঁড়াতে পেরেছি। ট্রেনে ভেতরে, ছাদে কোথাও জায়গা নেই। শুধু মানুষ আর মানুষ। এভাবেই দাঁড়িয়ে যেতে হবে গন্তব্যে। ঈদ এলে মানুষের এমন ভোগান্তি প্রতি বছরেই হয়। তবুও প্রিয়জন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পৌঁছাতে পারলে আমরা সব ভোগান্তি, বিড়ম্বনার কথা ভুলে যাই। যে কারণে এভাবে কষ্ট করেই আমাদের বাড়ি ফেরা।

স্টেশনে এত ভিড় দেখে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ফাঁকা জায়গায় গিয়ে অপেক্ষা করছিলেন উত্তরবঙ্গের আরেক যাত্রী শহিদুল ইসলাম। তিনি রাত ১১টার পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে রাজশাহী যাবেন।

শহিদুল ইসলাম বলেন, রাজশাহীর ট্রেন ১১টায়, তার আগেই স্টেশন যাত্রীতে ভরে গেছে, কমলাপুরজুড়ে জনস্রোত। রাজশাহীর ট্রেনের জন্য অনেকে আগেই স্টেশনে পৌঁছে অপেক্ষা করছে। এর আগে উত্তরবঙ্গের আরেক ট্রেন দ্রুতযান যাত্রীতে ঠাসা হতে দেখলাম। ছাদ, বগি, গেট– সব জায়গায় যাত্রী আর যাত্রী। সবাই শেকড়ের টানে ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি ফিরছে। আমাদের ট্রেনেও এমন ভিড় হবে বলে মনে হচ্ছে, কারণ প্ল্যাটফর্মে হাজার হাজার মানুষ দেখা যাচ্ছে।

এর আগে কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানান, আজ ঈদযাত্রার চতুর্থ দিন। অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রীর চাপ আজ বেশি ছিল। যাত্রীর চাপ বাড়লেও শিডিউল বিপর্যয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। দু’একটি ট্রেন বিলম্বে ছাড়তে পারে। এই ট্রেনগুলো ঢাকায় আসতেই দেরি করেছে। তাই ছাড়তে দেরি হয়েছে। আজকের পর যাত্রীর চাপ কমে যাবে স্টেশনে।

এএসএস/এসএসএইচ/

Link copied