পুলিশ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ৩ ছিনতাইকারী

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৩ জুলাই ২০২৩, ০৩:৩৭ পিএম


পুলিশ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ৩ ছিনতাইকারী

অভিযুক্ত তিন ছিনতাইকারী

রাজধানীর ফার্মগেটে ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল মনিরুজ্জামান তালুকদার হত্যাকাণ্ডে তিন ছিনতাইকারী সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।

সোমবার (০৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে দুইজনের নাম রাব্বি (২১) ও লিটন (২১)। আর বাকি একজনের নাম ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফার্মগেট এলাকায় ছিনতাইকারীদের হাতে খুন হয়েছেন পুলিশ সদস্য মনিরুজ্জামান। ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই কনস্টেবল মনিরুজ্জামানকে খুন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে তাকে আক্রমণ করে তিন ছিনতাইকারী। এ সময় পুলিশ সদস্য মনিরুজ্জামান তাদের বাধা দেন। এ সময় তাকে ছুরিকাঘাত করে মানিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। 

ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ঈদের আগে ১ হাজারেরও বেশি ছিনতাইকারীকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া গত ৪৮ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ১৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি। 

তিনি বলেন, যেকোনো উৎসবকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশ রাস্তাঘাট, মার্কেট, শপিংমল ও কোরবানির পশুর হাট কেন্দ্রিক নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করে। তারপরও 'অ্যাবসোলুট' সিকিউরিটি বলতে কোন কিছু নেই। যদি অ্যাবসোলুট সিকিউরিটি বলতে কিছু থাকতো, তাহলে হয়ত সারা বিশ্বে আলাদা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন হতো না।

তিনি আরও বলেন, এবার ঈদে দুইটি বড় ঘটনা সবাইকে নাড়া দিয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘটনা হচ্ছে- ঈদের দিন রাতে হাতিরঝিল এলাকায় একজন সাংবাদিক ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে আহত হয়েছেন। আর অন্য আরেকটি হচ্ছে আমাদের একজন পুলিশ কনস্টেবল ছিনতাইকারীদের হামলায় ফার্মগেট এলাকায় নিহত হয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সাংবাদিককে আহত করার ঘটনায় জড়িত হামলাকারীদের আমরা শনাক্ত করে ফেলেছি। এ বিষয়ে খুব দ্রুতই আমরা সুসংবাদ দিতে পারব বলে আশা করি। কনস্টেবল মনিরুজ্জামানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩ ছিনতাইকারীকে গত ৪৮ ঘণ্টায় আমরা গ্রেপ্তার করেছি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও আমরা জব্দ করতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘটনায় আরও কিছু কাজ আমাদের বাকি রয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি যারা জড়িত তাদেরকে আমরা গ্রেপ্তার করতে পেরেছি।

হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও উদ্ধারকৃত মোবাইলফোন

মনিরুজ্জামানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিএমপির এই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ঘটনার দিন ভোর রাতে কনস্টেবল মনিরুজ্জামান শেরপুর থেকে বাসে করে ঢাকায় আসে। ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার আগে সে ফার্মগেটের ওই ঘটনাস্থলে রাস্তা পারাপার হওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিল।

এ সময় তিন ছিনতাইকারীর মধ্যে একজন প্রথমে কনস্টেবল মনিরুজ্জামানের রাস্তা অবরোধ করে এবং তার কাছে মানিব্যাগ চাই। কিন্তু মনিরুজ্জামান তাদেরকে মানিব্যাগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ছিনতাইকারী তিনজন হওয়ায় তিনি তাদের সঙ্গে পেরে উঠেননি। তখন ছিনতাইকারীরা মনিরুজ্জামানের শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাত করে তার মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনা ঘটিয়ে তারা মোহাম্মদপুর থেকে আরও পশ্চিম দিকে চলে যায়। সেখান থেকে তারা আলাদা হয়ে যায়।

নিহত মনিরুজ্জামানের বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, কনস্টেবল মনিরুজ্জামান প্রভিডেন্ট ফান্ডের ইন্টারেস্টের টাকা নিতেন না। তিনি খুব সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি ছিলেন। তাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি যে- বাংলাদেশ পুলিশে এ ধরনের কনস্টেবল আছে। তার বয়স মাত্র ৪০ বছর, এই সময় তাকে আমরা হারিয়েছি।

এমএসি/এমজে

Link copied