শেফস টেবিলের ৩৬ রেস্টুরেন্টে ভ্যাট ফাঁকির মহোৎসব
রাজধানীর বাড্ডায় মাদানি এভিনিউর ফুডকোর্ট ‘শেফস টেবিলে’র ৩৬টি রেস্টুরেন্টে ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। গত ১১ মাসে ১৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বিক্রির তথ্য গোপন করেছে এই রেস্টুরেন্টগুলো। মোট ২ কোটি ৬১ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ মিলেছে তাদের বিরুদ্ধে।
ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীনের নেতৃত্বে গত ২২ মার্চ শেফস টেবিলে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সোমবার (২৯ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ভ্যাট ফাঁকির দায়ে ‘শেফস টেবিলে’র প্রত্যেকটি রেস্টুরেন্টকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়েরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ভবিষ্যতে ভ্যাট ফাঁকি রোধে শেফস টেবিলের প্রতিটি রেস্টুরেন্টে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস বসানোর জন্য ভ্যাট গোয়েন্দা ঢাকা উত্তর কমিশনারেটকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
‘শেফস টেবিল’ ইউনাইটেড গ্রুপের একটি ফুডকোর্ট। এটি বাড্ডার ইউনাইটেড সিটিতে অবস্থিত। রাজধানীর ভোজন-রসিকদের প্রিয় খাবারের জায়গা এটি। এই ফুডকোর্টে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৩৬টি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এটি উদ্বোধন করা হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে।
ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, যাত্রার শুরু থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ১১ মাসে মোট ১৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার বিক্রির তথ্য গোপন করা হয়েছে। করোনার কারণে ফুডকোর্টটি এপ্রিল ২০২০ থেকে জুন ২০২০ তিন মাস বন্ধ ছিল।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ১১ মাসে ৩৬টি রেস্টুরেন্টে প্রকৃত বিক্রয় ছিল ২৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা এবং ভ্যাটযোগ্য মূল্য ছিল ২০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ৩৬ টি রেস্টুরেন্ট পৃথকভাবে ভ্যাট রিটার্নে প্রদর্শন করেছে ২ কোটি ৮৩ লাখ টাকার বিক্রয়। তাদের অপ্রদর্শিত বিক্রির পরিমাণ ১৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এসব রেস্টুরেন্টের এই গোপনকৃত বিক্রয়ের উপর ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। রেস্টুরেন্টগুলো খাবার বিক্রির সময়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করলেও আদায়কৃত ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি।
অভিযানে গোয়েন্দা দল শেফস টেবিলের কম্পিউটারের তথ্য ও অন্যান্য বাণিজ্যিক দলিল জব্দ করে। শেফস টেবিল প্রতিটি রেস্টুরেন্ট থেকে ১৮ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ারিং করে। বিভিন্ন নথি ও রেস্টুরেন্টের রিটার্ন যাচাই করে এই হিসাব বের করা হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ফাঁকি দিয়েছে আফগান গ্রিল- ২৩.৭১ লাখ টাকা। এরপর আছে দরবার ক্যাটারিং- ১৫.৭৪ লাখ টাকা, টরকা এক্সপ্রেস- ২৪.৬০ লাখ টাকা, পান্জাব কিচেন- ১৪.০৪ লাখ টাকা, থাই এমারেল্ড- ১৩.৩৯ লাখ টাকা, এবসলিউট থাই - ১২.৫৩ লাখ টাকা, সিলান্ট্রা- ১২.৫৯ লাখ টাকা, পিৎজা গাই- ১২.১৯ লাখ টাকা এবং আলফ্রেসকো-১১ লাখ টাকা।
আরএম/জেএস