গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের নামে যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে ‘যাত্রী অধিকার আন্দোলন’ নামক একটি সংগঠন। শুক্রবার (২ এপ্রিল) সংগঠনটির আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল ও যুগ্ম-আহ্বায়ক অন্তু মুজাহিদ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ না করে শুধু গণপরিবহনে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। গত কয়েকদিনে রাজধানীতে তারই বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি। কেউ কেউ গাড়ির জন্য তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গাড়ি পাননি। এটা সরকারের সমন্বয়হীনতা বলে মনে করে যাত্রী অধিকার আন্দোলন।
তারা আরও বলেন, গণপরিবহনের বাড়তি চাপ কমাতে হলে আগে বাসায় বসে অফিস বা ভিন্ন অফিস টাইম নিশ্চিত করতে হবে। অথচ সরকার সেই ব্যবস্থায় না গিয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্ররোচনায় পা দিয়ে শুধু ভাড়া বৃদ্ধির জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাত্রীদের নিয়ে চিন্তা থাকলে এমন তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত আসত না বলে দাবি করেন তারা।
গত দুদিনের গণপরিবহনের চিত্র পর্যবেক্ষণ করে তারা বলেন, এ ব্যবস্থা কোনোভাবেই করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করছে না। বরং বাসে হুড়োহুড়ি করে ওঠতে গিয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়েছে। তাই যাত্রীসেবা নির্বিঘ্ন করতে বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে সংগঠনটি।
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে-
- গণপরিবহনের অর্ধেক যাত্রী বহনের জন্য নির্ধারিত ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া বাতিল করতে হবে।
- গণপরিবহনে বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার সবশেষ চার্ট বাসে টাঙানো বাধ্যতামূলক করতে হবে। নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত ও বাড়তি যাত্রী বহনের বিষয়টি তদারকি করতে হবে।
- সবার জন্য নিরাপদ গণপরিবহন নিশ্চিত করতে হবে। সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
- অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হলে অফিস-আদালতগামী যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে অফিস টাইম পরিবর্তন করতে হবে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ হোম অফিস বাধ্যতামূলক করতে হবে।
- অর্ধেক যাত্রী নয় বরং বিআরটিএ নিয়ম অনুযায়ী আসনের অতিরিক্ত যাত্রী বহন বন্ধ করতে হবে। তাহলেই করোনার ঝুঁকি অনেকটা কমে আসবে।
- প্রতিটি গাড়িতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার অতিরিক্ত মাক্সসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে সরকারি ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে।
- বিআরটিসির সব গাড়িকে যাত্রী বহনের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে অলস পড়ে রয়েছে এমন পরিবহনগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
- সর্বোপরি করোনার অবাধ বিস্তার ঠেকাতে আংশিক বা পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা যেতে পারে।
এএসএস/ওএফ/জেএস