মোড়ে মোড়ে ভোগান্তি ও অপেক্ষা

দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সম্প্রতি ১৮টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে একটি, গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ আসন খালি রাখতে হবে। এই নির্দেশনার পর ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ৬০ শতাংশ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
নির্দেশনা কার্যকরের পর দিন যত গড়াচ্ছে, সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি ও ক্ষোভ ততই বাড়ছে। এছাড়া নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার পর থেকে রাজধানীর কয়েকটি রাস্তায় বিক্ষোভও করেছেন যাত্রীরা।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়েও গণপরিবহনে উঠতে পারছেন না যাত্রীরা। এছাড়া রাইড শেয়ারিং বন্ধ ঘোষণা হওয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকরা হাঁকাচ্ছেন আকাশচুম্বী ভাড়া। ফলে সড়কে রাজধানীবাসীর ভোগান্তি যেন দিন দিন বেড়েই চলছে।

শনিবার (৩ এপ্রিল) ছুটির দিন সকালে রাজধানীর বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোড, শেওড়া, নিকুঞ্জ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাড্ডা থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল পর্যন্ত মোড়ে মোড়ে যাত্রীরা দীর্ঘ সময় ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। এসব এলাকায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর পর একটি-দুটি করে বাস আসছে। তবে এসব বাসের অধিকাংশেরই দরজা বন্ধ। ফলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও কাঙ্ক্ষিত বাস আসার পরও আসন না থাকায় উঠতে পারছেন না যাত্রীরা। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় যাত্রীর চাপ কিছুটা কম ছিল।
অনেকে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করে গণপরিবহন না পেয়ে অফিসে দ্রুত যাওয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশা খুঁজছেন। পেলেও চালকরা চাচ্ছেন কয়েকগুণ বেশি ভাড়া।

কুড়িল বিশ্বরোডে আব্দুল্লাহপুরগামী বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী সাঈদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৯টা থেকে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এখন ১০টা বাজতে চলল, কিন্তু বাসে আসন পাচ্ছি না। অধিকাংশ বাস গেইট লক অবস্থায় আসছে। আমি তো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। ভেবেছিলাম আজ ছুটির দিনে ভোগান্তি কিছুটা কম হবে। কিন্তু ভোগান্তির তো কোনো শেষ নেই।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের বিপরীত পাশের বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমাণ যাত্রী মো. মিসবা বলেন, ফার্মগেট যাওয়ার জন্য একঘণ্টা ধরে রাস্তায় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এর মধ্যে তিনটি বাস এলো। কিন্তু একটাতেও সিট খালি নেই। এমন অবস্থায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকের কাছে গেলাম। তিনিও কয়েকগুণ বেশি ভাড়া চাচ্ছিলেন। এভাবে ভোগান্তি চলতে থাকলে আমরা অফিস কীভাবে করব? করোনার চেয়ে তো এই সমস্যা এখন বড় হয়ে যাচ্ছে।
যাত্রীদের গণপরিবহনের জন্য এমন দুর্ভোগ রাজধানীর সর্বত্র দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে ৫০ শতাংশ যাত্রী অনেক বাসে চলাচল করলেও বাসচালক ও যাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। যারা বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন, তারাও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।

বাসে উঠতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ মিনিট
শনিবার (৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেখা যায়, এই পথে চলাচলকারী বেশিরভাগ বাসই দরজা বন্ধ রেখে চলাচল করছে। ৩০ মিনিটের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, প্রত্যেক যাত্রীকে বাসে উঠতে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এমএসি/এমএইচএন/আরএইচ