মিরপুরে রাস্তা অবরোধ করে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এসব বিধিনিষেধ কার্যকর হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ব্যবসায়ীরা।
রোববার (৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে মিরপুর-১০ মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করছেন তারা। এতে মিরপুর-১০ নম্বর দিয়ে চলাচল করা সব রাস্তার যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মিরপুর-১০ নম্বর মোড়ের যোগাযোগ আশপাশের এলাকার সঙ্গে বন্ধ রয়েছে।
বিক্ষোভ থেকে ব্যবসায়ীরা দ্রুত কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার দাবি জানান। এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাজিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিকেলে ৪টা ১০ মিনিটের দিকে ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নামেন। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছি। ব্যবসায়ীদের রাস্তা ছেড়ে চলে যেতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা
লকডাউনের বিষয়টি উল্লেখ না করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাত দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। ৫ এপ্রিল (সোমবার) থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এসব বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (৩ এপ্রিল) আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করবে সরকার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা কথা দিয়ে কথা না রেখে দূরপাল্লায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে, তাদের উদ্দেশে কাদের বলেন, দুর্যোগের মধ্যে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবেন না।
তিনি আরও বলেন, রমজান এলেই এক শ্রেণির ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।অহেতুক মূল্যবৃদ্ধি ও মজুদদারি নিয়ন্ত্রণে সরকার সতর্ক রয়েছে।
পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ
এদিকে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের পর্যটনকেন্দ্র। বাতিল করা হচ্ছে হোটেল-মোটেলে আগাম নেওয়া বুকিং। পাশাপাশি নতুন বুকিংও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বন্ধ থাকবে দোকানপাট-শপিংমল
লকডাউনের সময় দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ থাকবে। ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুর রহমান টিপু এ বিষয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউনের বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমাদের মানতেই হবে। কারণ দেশের করোনা পরিস্থিতি এখন ভালো না। তাই আগামী ৫ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ থাকবে। তবে আমাদের দাবি এই লকডাউন এক সপ্তাহের বেশি যেন না বাড়ে।
বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (অ্যাকাউন্ট) শেখ আব্দুল আলিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সেভাবেই আমরা চলব। শপিংমল এক সপ্তাহ বন্ধ রাখতে বললে আমরা বন্ধ রাখব।
পোশাক ও শিল্পকারখানাগুলো খোলা থাকবে
লকডাউনের বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, লকডাউনে জরুরি সেবা দেয় এমন প্রতিষ্ঠানগুলোই শুধু খোলা থাকবে। এছাড়া পোশাক ও শিল্পকারখানাগুলো খোলা থাকবে। কারণ কারখানা বন্ধ হলে শ্রমিকদের বাড়িতে ফেরার বিষয় থাকে। এতে করোনার ঝুঁকি আরও বাড়বে। তবে কারখানায় শ্রমিকদের একাধিক শিফটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করতে হবে।
এমএসি/এইচকে