বিবিএসের অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্প যাচ্ছে একনেকে

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্প’ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তোলা হচ্ছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। একনেক কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানায়, পরিকল্পনা বিভাগের আওতাধীন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। একনেক সভায় ‘অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩’ প্রকল্পটি অনুমোদনের পর এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৫৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নের এই প্রকল্পটি অনুমোদনের পর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য যা বলা আছে, ‘অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩’ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতিসংঘ প্রণীত আন্তর্জাতিক গাইডলাইন সিস্টেম অব ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস (এসএনএ), ইন্টারন্যাশনাল স্টান্ডার্ড অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্লাসিফিকেশন (আইএসআইসি) এবং জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ অনুযায়ী দেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মালিকানা, কাঠামো, লিগ্যাল স্ট্যাটাস, কর্মকাণ্ডের ধরন, উৎপাদিত পণ্য বা সেবার ধরন, কর্মসংস্থান, স্থায়ী সম্পদের মূল্য ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা। কৃষি বহির্ভূত সব ধরনের প্রতিষ্ঠান ও খানা অর্থনৈতিক শুমারির আওতাভুক্ত হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, জরিপ কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, ১০৭টি সেমিনার/কনফারেন্স, যানবাহন ভাড়া, পরামর্শক ব্যয়, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক ক্রয় এবং কম্পিউটার সফটওয়ার সংগ্রহ।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে ‘মনিটরিং এবং ইভালুয়েশন’ জোরদারকরণে প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান সরবরাহের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও সেবা খাতের প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার বলেন, প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশের মৌলিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যভাণ্ডার তৈরি করবে। যা ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণের জন্য এ সংক্রান্ত জরিপের জন্য নমুনা ফ্রেম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এর ফলে বেঞ্চমার্ক তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা যাবে, যার প্রয়োজন হবে মাইক্রো ও ম্যাক্রো পর্যায়ের উন্নয়ন কর্মসূচির পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নের জন্য। অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালনা করলে জিডিপি প্রাক্কলনের প্রক্ষেপণ, যৌক্তিকীকরণ এবং আধুনিকীকরণ হবে। যার ফলে দেশের জিডিপি’র আকার এবং এর প্রবৃদ্ধি সঠিকভাবে নিরূপণ করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, তথ্য বিভ্রাট ও তথ্যের দ্বৈততা দূরীকরণের লক্ষ্যে কৃষি বহির্ভূত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য বিভিন্ন উৎস হতে সংগ্রহ ও সরবরাহের পরিবর্তে একটি একক উৎস হতে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তাই অর্থনৈতিক শুমারিই হতে পারে খাতভিত্তিক অর্থনীতির গতি প্রকৃতির পরিমাপক ও সরকারের অন্যতম তথ্যভাণ্ডার।
এসআর/এমএ