রোহিঙ্গা ভরণপোষণ অর্থনীতিতে প্রবল চাপ সৃষ্টি করছে: কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, টেকনাফ-উখিয়ায় আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার ভরণপোষণ দেশের অর্থনীতিতে প্রবল চাপ সৃষ্টি করছে। হুমকির মুখে পড়েছে সামাজিক পরিবেশ ও ভারসাম্য। দেখা দিয়েছে মানবিক ও পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকে শান্তিপূর্ণ সমাধানে সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করে আসছে। কূটনৈতিক তৎপরতাও অব্যাহত রেখেছে। ধারণক্ষমতার অধিক মানুষ বসবাস করায় পর্যটন শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের প্রত্যাবাসন দেরি হওয়ায় সরকার ভাসানচরে অধিকতর সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে যারা ভাসানচরে গেছে তারা স্বস্তি প্রকাশ করছে। কিন্তু কোনো কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গণমাধ্যম জোরপূর্বক স্থানান্তরের মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে দেশে করোনাভাইরাসের টিকা এসে পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে করোনা টিকা সংগ্রহে উদ্যোগ নিয়েছে। টিকা সংগ্রহ এবং ব্যবস্থাপনার বিষয়টি সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে ।
সেতুমন্ত্রী অভিযোগ করেন, একটি মহল সরকারের যেকোন ভালো উদ্যোগের অহেতুক সমালোচনায় সক্রিয়। টিকা আসার আগেই সেই মতলবি মহল বিভ্রান্তি শুরু করেছে।
দ্বিতীয় ধাপে ভাসানচরের পথে আরও এক হাজার রোহিঙ্গা
দ্বিতীয় ধাপে সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শরণার্থী শিবিরের কয়েকটি ক্যাম্প থেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন এক হাজার রোহিঙ্গা। এর আগে ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ভাসানচরে যান ১৬৬০ রোহিঙ্গা। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে দ্বিতীয় ধাপের রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে নিজেরাই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাহারছড়া ক্যাম্পের হেড মাঝি আবুল হাশেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এসব রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। কেউ প্ররোচিত করেনি। এ সময় শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাদের বিদায় জানান।
২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। নতুন-পুরাতন মিলে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। সেখান থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এইউএ/এসআরএস