দুর্যোগ সহনীয় জাতি গঠনে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বাঙালি জাতিকে দুর্যোগ সহনীয় একটি জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘দুর্যোগ সহনশীলতা সপ্তাহ ২০২৩’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ বি তাজুল ইসলাম এমপি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস, বাংলাদেশে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডে এবং বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জন্য দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস (ডিআরআর) ধারণার পথপ্রদর্শক এবং ১৯৭০ সালে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হওয়ার পর সাইক্লোন প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দুর্যোগ ঝুঁকি কমিয়ে একটি দুর্যোগ সহনীয় জাতি গঠনে নানা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এনামুর রহমান বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি’র (সিপিপি) নারীর ক্ষমতায়ন’ উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে ‘এসডিজি অর্জনে জেন্ডার-রেসপন্সিভ সেবা’ ক্যাটাগরিতে ‘জাতিসংঘ জনসেবা পদক ২০২১’এ ভূষিত হয়েছে।
তিন বলেন, দুর্যোগ ঝুকি-হ্রাস ও দুর্যোগ মোকাবিলা কার্যক্রমকে সমন্বিত, লক্ষ্য ভিত্তিক ও শক্তিশালী এবং সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১৫, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১১, মৃতদেহ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা-২০১৬, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি)- ২০১৯ সহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলিল প্রণীত হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রতিবন্ধী, নারী, বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুসহ দুর্গত জনগোষ্ঠীর চাহিদা নিরূপণ ও বাস্তবায়ন করা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৫-২০৩০ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রণীত হয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক। এই আইন, বিধি, পরিকল্পনা ও নীতিমালার আলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্কের লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনায় নিয়ে সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এনামুর রহমান বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ুর ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য দুর্যোগ ঝুকি-হ্রাস বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে সরকার ১০০ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ প্রণয়ন করেছে। এই ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ সাল নাগাদ স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাগুলোর সমন্বয়ে যোগসূত্র সৃষ্টি করবে।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগে ঝুঁকি হ্রাসে জীবন ও সম্পদের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয়, টেকসই ও নিরাপদ দেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অবকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, যা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করবে।
/এসএসএইচ/