সংসদীয় কূটনীতি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে। সংসদীয় কূটনীতি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সিলেটের গ্র্যান্ড হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে ‘একাদশ বাংলাদেশ ভারত ফ্রেন্ডশীপ ডায়ালগ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ভারতীয় লোকসভার সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শ্রী ভিনসেণ্ট পাল, স্বপন দাসগুপ্ত ও ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বক্তৃতা প্রদান করেন। বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এএসএম শামছুল আরেফিন সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক সৈয়দ মুনতাসীর মামুন।
স্পিকার বলেন, বিগত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দু-দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অমীমাংসিত বিষয় ছাপিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন সারাবিশ্বে প্রতিবেশী কূটনীতির এক রোল মডেল।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জি-২০ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সরকার প্রধানদের অংশগ্রহণ বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এক অকৃত্রিম বন্ধুপ্রতিম দেশের উদাহরণ স্থাপন করেছে। দুই দেশের মধ্যকার শান্তি ও সমৃদ্ধি সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখাও এশিয়ার দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয়।
স্পিকার এসময় ভারতীয় পার্লামেন্টে এক তৃতীয়াংশ সংরক্ষিত নারী আসন বিল পাসের ঘটনাকে দু'দেশের সাদৃশ্যপূর্ণ সম্পর্ক তুলে ধরে বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, নারী আইনপ্রণেতা গঠনের মধ্য দিয়ে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এগিয়ে আছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, বাংলাদেশ ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক অংশীদার। অতি সম্প্রতি ভারতীয় রুপিতে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ককে অধিকতর ত্বরান্বিত ও সমৃদ্ধ করেছে।
স্পিকার বলেন, জ্বালানি খাতে ভারতের সহযোগিতার পাশাপাশি নেপাল থেকে জলবিদ্যুত আমদানিতে তৃতীয় সহযোগী দেশ হিসেবে ভারত সরকারের সহযোগিতা বাংলাদেশের জ্বালানি ঘাটতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, জনগণকেন্দ্রিক উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে দুই দেশের সরকারপ্রধান বরাবরই অবিচল লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে।
এসময় স্পিকার প্রযুক্তির জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন, ট্রানজিট ও ট্রান্সশীপমেন্টের জন্য মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার এবং দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ঘাটতি কমাতে শুল্কমুক্ত পণ্যের অবাধ প্রবাহের ওপর জোর আরোপ করেন।
এর আগে স্পিকারকে বিমানবন্দরে ফুলেল অভ্যর্থনা ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এসময় স্পিকার হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.) এর মাজার শরীফ জিয়ারত করেন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন।
অনুষ্ঠানে হুইপ ইকবালুর রহিম ও অন্যান্য সংসদ সদস্যবৃন্দ, কূটনৈতিকবর্গ, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ ও ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের আমন্ত্রিত নেতৃবৃন্দ, দেশবরেণ্য সাংবাদিকবৃন্দ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এসআর/এমএ