দুই পুলিশ সদস্যের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে, অপরাধ করলে ছাড় নেই : হারুন

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে এক ব্যবসায়ীর ৫৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্যের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাদের কাছ থেকে সাড়ে ৪১ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ৷
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রাতে ছিনতাইয়ে জড়িত দুই পুলিশ সদস্যসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার পুলিশের দুই সদস্য হলেন- এএসআই মো. দেলোয়ার হোসেন ও পুলিশ কনস্টেবল মো. আবু সায়েম।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, গত রোববার (৮ অক্টোবর) শ্যামপুর থানার ধোলাইপাড়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে ছিনতাইয়ের শিকার হন আবুল কালাম নামের একজন ব্যবসায়ী। ওই ঘটনায় জড়িত দেলোয়ার গুলশান থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও আবু সায়েম কনস্টেবল হিসেবে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত ছিলেন।
বুধবার (১১ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে ডাকাতির ঘটনা সম্পর্কে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, কার কী পরিচয় সেটি বিবেচ্য বিষয় না। কেউ অপরাধ করলে আমরা তাকে অপরাধী হিসেবে দেখি। তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আগেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কিংবা এই পরিচয় দিয়ে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় জড়িতদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এখন যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের রিমান্ডে আনা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্য প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্তে নেমে জানতে পারি ঘটনার সঙ্গে পাঁচজন জড়িত। আমরা অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। মামলায় ভুক্তভোগীরা উল্লেখ করেছেন ৫৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে। মামলাটি দস্যুতার তবে তদন্তে নেমে দেখলাম এটি একটি ডাকাতির ঘটনা।
গ্রেপ্তার চারজনের কাছ থেকে ৪১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়ি ও হ্যান্ডকাফ উদ্ধার করা হয়। পলাতক একজনকে গ্রেপ্তার করতে পারলে বাকি টাকা উদ্ধার হবে বলে আশা করছি। ঘটনার এক দিনের মধ্যে ডিবি পুলিশ ডাকাতদের গ্রেপ্তারসহ টাকা উদ্ধার করেছে বলে জানান হারুন।
এর আগে ৫৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ডিবির ওয়ারী ডিভিশন পুলিশের ওই দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার পুলিশের পক্ষ থেকে দেলোয়ার ও সায়েমের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে আদালত তাদের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে, সোমবার (৯ অক্টোবর) একই ঘটনায় মো. মোশারফ হোসেন ও মো. আবদুল বাতেন নামের গ্রেপ্তার দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
ডিবি জানায়, রোববার সকাল নয়টার দিকে শ্যামপুর থানার দোলাইরপাড়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে ছিনতাইয়ের শিকার হন আবুল কালাম নামের একজন ব্যবসায়ী। কয়েক ব্যক্তি মাইক্রোবাসে তাকে তুলে নিয়ে তার কাছে থাকা ৫৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন। তারপর ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের রসুলপুর এলাকার একটি ফাঁকা জায়গায় ফেলে চলে যান তাকে। আবুল কালাম ওই টাকা মতিঝিলের জনতা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় শ্যামপুর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি।
ডিবি সূত্র জানায়, মামলার পর ডিবি পুলিশ ছায়া তদন্ত শুরু করে। তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একটি গাড়ির নম্বর শনাক্ত করে। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চারজনকে শনাক্ত করা হয়। সোমবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘটনার সঙ্গে জড়িত মোশারফ ও বাতেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিনই তাদের আদালতে পাঠানো হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের বক্তব্যে উঠে আসে দুই পুলিশ সদস্যের নাম।
জেইউ/কেএ