বিদেশ থেকেই ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ

প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেন বিদেশে বসেই সহজে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করার সময় কমিটির আহ্বায়ক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এই নির্দেশ দেন। এ সময় ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ে বেশ কিছু ডিজিটাল ও স্মার্ট উদ্যোগের মধ্যে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি- এই ৪টি স্তম্ভ অন্যতম।
স্মার্ট সিটিজেন স্তম্ভের বৈশিষ্ট্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্পাদিত উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- রোবটিক সিস্টেম থেকে ভূমিসেবার তথ্য প্রাপ্তি, ডিজিটাল ভূমিসেবা ফরমসমূহ নিয়মিত হালনাগাদ, প্রতিমাসে প্রায় ৩ লাখ নামজারি মামলা অনলাইনে নিষ্পত্তি, ঘরে বসেই ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ, ডাক বিভাগের মাধ্যমে খতিয়ান ও ম্যাপ প্রাপ্তি, ১৬১২২/৩৩৩ -এ ফোন করেই ভূমিসেবা গ্রহণ, কিউআর কোডভিত্তিক ভূমিসেবা, স্মার্ট ল্যান্ড পয়েন্ট-থেকে ভূমিসেবা গ্রহণ-সম্পর্কিত গাইডলাইন চূড়ান্তকরণ।
স্মার্ট গভর্নমেন্ট স্তম্ভের বৈশিষ্ট্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্পাদিত উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- সরকারি-বেসরকারি ১২টির অধিক দপ্তর-সংস্থার সঙ্গে ডাটার আন্ত:সংযোগ, ল্যামস-এর আন্ত:সিস্টেমসমূহের মাধ্যমে আন্ত:যোগাযোগ, কিউআর কোড ভিত্তিক খতিয়ান, দাখিলা ও ডিসিআর, ২য় প্রজন্মের স্মার্ট মিউটেশন, স্মার্ট এলডি ট্যাক্স, স্মার্ট খতিয়ান, এলএসজির মাধ্যমে সব ধরনের ডেটার আন্ত:সংযোগ, ২০টির অধিক এসওপি/গাইডলাইনের খসড়া প্রণয়ন।
স্মার্ট ইকোনমি স্তম্ভের বৈশিষ্ট্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্পাদিত উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে সকল ভূমি অফিস ক্যাশলেস ঘোষণা, ভূমিসেবা প্রদানের কার্যক্রম উদ্যোক্তামুখীকরণ, সাইবার নিরাপত্তায় বিশেষায়িত ফার্ম নিয়োগ, অ্যাপ থেকেই ভূমিসেবা প্রদান, প্রতিদিন ৬ কোটি টাকার ভূমিসেবা ফি তাৎক্ষণিকভাবে কোষাগারে জমা, ল্যান্ড ক্লাউড সার্ভারের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন, কিউআর কোড স্ক্যান করেই ভূমিসেবা ফি পরিশোধ।
সভার আলোচনায় আরও উঠে আসে, ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে প্রবাসীদের বিভিন্ন সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিদেশে ডাকযোগে খতিয়ান প্রেরণ এবং ভূমিসেবা হটলাইন ১৬১২২ নম্বর থেকে ভূমি পরামর্শ সেবা। সুদূর ভেনিজুয়েলা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রবাসীরাও ডাকযোগে সার্টিফাইড খতিয়ান সেবা গ্রহণ করেন।
এ সময় ভূমিমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেন। এছাড়া চিহ্নিত ক্ষেত্রগুলোর উদ্দেশ্য, সমস্যা, সম্ভাবনা ও করণীয় নির্ধারণ এবং অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবু বকর ছিদ্দীক, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল বারিক প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’ গঠন করা হয়েছে। মূলত, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’ই এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’ হিসেবে কাজ করবে। স্মার্ট বাংলাদেশ স্থাপনের কাজকে দক্ষ ও গতিশীল করতে ১৫টি উপকমিটি গঠন করা হয়। এর একটি হচ্ছে ‘স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা’।
এমএইচএন/এমজে