চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচরের পথে ১৭৭২ রোহিঙ্গা

দ্বিতীয় দফায় ভাসানচরে যাওয়ার জন্য চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে করে রওনা হয়েছেন এক হাজার ৭৭২ জন রোহিঙ্গা।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে তাদের জাহাজে তোলা শুরু হয়। এরপর ৯টা ২০ মিনিটের দিকে তাদের বহনকারী ৭টি জাহাজ ভাসানচরের পথে রওনা হয়।
স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার জন্য সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শরণার্থী শিবিরের কয়েকটি ক্যাম্প থেকে তারা ১৩টি বাসে চট্টগ্রাম পৌঁছান। এদিন সকাল থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাসগুলো ছাড়তে শুরু করে। তবে এ বিষয়ে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি প্রশাসনের কেউ।
তবে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, গত ৪ ডিসেম্বর যারা ভাসানচর গিয়েছেন, তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসব রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে নিজেরাই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাই তাদেরকে ভাসানচর নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সকালে টেকনাফের বাহারছড়া ক্যাম্পের ২৮টি পরিবারের ১১০ জন রোহিঙ্গা প্রথমে তিনটি বাসে করে চট্টগ্রামের নৌবাহিনী ঘাঁটির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বাকিরা পর্যায়ক্রমে যাবে।
বাহারছড়া ক্যাম্পের হেড মাঝি আবুল হাশেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এসব রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। কেউ প্ররোচিত করেনি। এ সময় শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাদের বিদায় জানান।
প্রথম ধাপে ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা উন্নয়ন সংস্থা স্কাসের চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য, খাদ্য এবং সামাজিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে ২০টি এনজিও। সেই সংখ্যা বেড়ে আরও ৯টি নতুন সংস্থা যোগ হচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় আরও এক হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে নেওয়ার কথা আমরাও শুনেছি।
গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ভাসানচরে যায় ১৬৬০ জন রোহিঙ্গা। মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে সাগরে আটক আরও তিন শতাধিক রোহিঙ্গা ভাসানচরে রয়েছে। এছাড়াও ভাসানচর যেতে নিবন্ধিত হয়েছে আরও সাত হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। যাদের ভাসানচর নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। পর্যায়ক্রমে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচর নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। নতুন পুরনো মিলে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচর নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
জেডএস
