ক্রেতার অপেক্ষায় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা

হরতাল ও অবরোধহীন ছুটির দিনে ক্রেতার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নিউমার্কেট ও আশপাশের বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানিরা। রাজনৈতিক অস্থিরতায় আতংক তৈরির কারণে মানুষের উপস্থিতি না থাকায় গত সপ্তাহজুড়ে তলানিতে চলে যায়। তবে আজ ভরপুর ক্রেতার উপস্থিতিতে সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যাবে এমন প্রত্যাশা করছেন তারা।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এমনটিই বলেছেন এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরের শেষ সময় বিক্রির একটি ভরপুর মৌসুম। বিশেষ করে এই ২ মাস সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে শীতের কাপড়ের। তাই ঋতু পরিবর্তনের কারণে গরমের দিনে পরা যায় এমন কাপড় দ্রুত কম দামে বা বিভিন্ন অফার দিয়ে তারা বিক্রি করে দেন। কারণ যত দ্রুত গোডাউন খালি করা যায় ততই ভালো। এতে করে শীতের জন্য আগাম কাপড়ের কালেকশন সংগ্রহ করা যায়। সেজন্য যদি গরম কাপড়ের গোডাউন ফাঁকা করা না যায় তাহলে শীতের কাপড় তোলা কষ্টকর হয়ে পড়ে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এরকম একটি সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের।
নিউমার্কেটে সব সময় দূরদূরান্ত থেকে মানুষ কম দামে পণ্য কেনার জন্য আসেন দাবি করে তারা আরও বলেন, অধিকাংশ সময়ই আশপাশের তুলনায় নিউমার্কেটে দূরের মানুষজন কেনাকাটা করতে আসেন। দোহার, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মিরপুর, গাজীপুর, সাভার, বাড্ডাসহ ঢাকার দূরদূরান্ত থেকে এখানে তারা বেশি আসেন। কিন্তু অবরোধ, হরতালে মতো কর্মসূচিতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে মানুষজন প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকেই বের হচ্ছেন না।
এমন অবস্থায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে সকাল থেকে সরেজমিনে নিউমার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ঘুরে দেখা যায়— ছুটির দিন হলেও তেমন একটা ক্রেতার সমাগম নেই। তবে শুক্রবার দিন জুমার নামাজের পর থেকে রাত পর্যন্ত প্রচুর ক্রেতা সমাগম হয় বিধায় সে অনুযায়ী তাদের প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়। শাড়ি, পাঞ্জাবি, পায়জামা, থ্রি পিস, বাচ্চাদের কাপড় থেকে শুরু করে ক্রোকারিজ, প্ল্যাস্টিক সামগ্রী ও নিত্যপণ্যের দোকানিরাও আজকের দিনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে দোকান পরিপাটি করছেন ক্রেতার জন্য।
চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী বাপ্পি চৌধুরী বলেন, এখনো শীতের বেচাকেনা তেমন একটা শুরু হয়নি। তবে আমরা ইতিমধ্যেই হুডি, ফুল হাতা টি শার্ট, সোয়েটার, জ্যাকেট, ড্যানিম শার্ট, জার্সি, সোয়েটার প্যাস্ট সংগ্রহ করা শুরু করেছি। এখন দোকানে জিন্স প্যান্ট, শার্ট, টুইল প্যান্টের কালেকশন আছে। গত সপ্তাহ জুড়ে একদম বেচাকেনা হয়নি। নতুন মাস শুরু হলেও কর্মচারীদের বেতন দিতে পারিনি। দোকান ভাড়া সঙ্গে বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচের যোগান দেওয়া খুব কষ্ট হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাবে।
অধিকাংশ মানুষই এখন হিসেব করে টাকা খরচ করেন উল্লেখ করে রবিউল হাসান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে গেলে আমাদেরই হিমশিম খেতে হয়। সেখানে সাধারণ মানুষের অবস্থা তো আরও খারাপ। সামনের সপ্তাহেও অবরোধ। এখন কীভাবে কি করব বুঝতে পারছি না। শুক্র ও শনিবার দুই দিন যদি ভালো বিক্রি না হয় তাহলে দুই সপ্তাহের লসে পড়ে যেতে হবে। কর্মচারীদের বেতন দূরে থাক চালানই ঘাটতি পড়ে যাবে।
আরএইচটি/এমএ