অবরোধেও সব ধরনের পরিবহন চালানোর ঘোষণা

রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া বিএনপি-জামায়াতের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধে সারা দেশে সব ধরনের পরিবহন চালানোর ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি।
শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে বিভিন্ন পরিবহন সংগঠনের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক সামদানী খন্দকার জানান, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধে ঢাকাসহ সারা দেশে বাস-মিনিবাস চলাচল অব্যাহত থাকবে। সব রুটে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য সমিতি বা কোম্পানিভুক্ত মালিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, অবরোধের দিনগুলোতে গাড়ি চলাচল যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য রাজধানী ঢাকাসহ জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
সরকারি পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা হিটলার বল বলেন, অবরোধেও বিআরটিসি বাস স্বাভাবিকভাবে চলাচল করবে।
আরও পড়ুন
ট্রেনের বিষয়ে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, অবরোধে ট্রেনের কোনো সময়সূচি পরিবর্তন হবে না। ট্রেন সময়মতো চলবে। সরকারি বাহন অবরোধ-হরতালেও জনসাধারণের জন্য স্বাভাবিকভাবে চলাচল করবে।
লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, লঞ্চ চলাচল যাত্রীর ওপর নির্ভর করবে। তবে বন্ধ থাকবে না।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আবারও দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, রোববার (৫ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলোও এই কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এবং মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে রোববার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তাদের শরিকরাও এই অবরোধ পালন করবে। পাশাপাশি জমায়াতে ইসলামীও আলাদা করে এই ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ তিনদিন (৩১ অক্টোবর-২ নভেম্বর) টানা অবরোধ পালন করে বিএনপি-জামায়াত। তার আগে ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে বিএনপি ও এর শরিকরা।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ। সেদিন দুপুরের দিকে বিএনপির সমাবেশে আসা লোকজনের সঙ্গে কাকরাইল মোড়ের কাছে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী লোকজনের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করার পর এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয় এবং বেশকিছু গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। উপস্থিত সাংবাদিকদেরও ব্যাপক মারধর করা হয়। এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও উপুর্যুপরি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির সমাবেশ ভণ্ডুল করে দেয়। এর ফলে সংঘর্ষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালানো হয়।
সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে পরদিন ২৯ অক্টোবর বিএনপি হরতাল পালন করে। একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হয়।
এদিকে, হরতালের দিন এবং পরবর্তী কয়েকদিনে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এমএইচএন/এসএসএইচ