হাটহাজারীর সেই ওসি-এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতে আবেদন

উচ্চ আদালতের জামিন থাকা সত্ত্বেও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে ক্ষমতা দেখানো চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারীর উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মুবিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। সোমবার (৬ নভেম্বর) চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সহিদুল ইসলামের আদালতে এ আবেদন করা হয়। তবে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এখনো কোনো আদেশ দেননি আদালত।
ভুক্তভোগীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহামদ সাইফ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়া সত্ত্বেও আমার মক্কেল খাইরুল আলম চৌধুরীকে রোববার সন্ধ্যায় হাটহাজারী থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কয়েকঘণ্টা তাকে হাজতে রাখার পর বিষয়টি নিয়ে নিউজ এবং জানাজানি হলে হাটহাজারী থানা পুলিশ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে একটি কাগজে মুচলেকা নেওয়া হয়। একজন জামিনপ্রাপ্ত আসামিকে এভাবে মুচলেকা নেওয়া বেআইনি। আমরা সেই কাগজ তলব এবং অভিযুক্ত ওই ওসি এবং এএসআইয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আদালতে আবেদন করেছি। সেখানে ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত ‘হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া আসামিকে গ্রেপ্তার, ক্ষমতা দেখাল হাটহাজারী থানা পুলিশ’ প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছি। আদালত এখনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। যদি নিম্ন আদালতে কোনো ব্যবস্থা না নেন, তাহলে আমরা বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে যাব।
এর আগে, রোববার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাটহাজারী থানার চৌধুরীহাট সড়কের পাশ থেকে খাইরুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার পর তাকে ৩ ঘণ্টার বেশি সময় হাজতে রাখে পুলিশ। পরে বিষয়টি নিয়ে ১০টা ৩৭ মিনিটের দিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে প্রতিবেদক হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন দেন। ওই সময় ওসি হাইকোর্টের জামিনে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামি ছেড়ে দিয়েছেন বলে প্রতিবেদককে দাবি করেন। যদিও তখনো আসামিকে ছেড়ে দেয়নি পুলিশ। এর আনুমানিক ৫ মিনিট পর আসামিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতারণা, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও হুমকি প্রদানের অভিযোগে আদালতে দায়ের হওয়া একটি মামলায় খাইরুল আলম চৌধুরী ও তার দুই ভাই দিদারুল আলম ও সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এরপর ভুক্তভোগীরা উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন। ১৯ অক্টোবর বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও এ. কে. এম জহিরুল হকের দ্বৈত বেঞ্চ তিন ভাইকে অন্তর্বর্তীকালীন ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। এসময়ের মধ্যে তাদেরকে চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হতে বলা হয়।
এদিকে উচ্চ আদালতের এই আদেশের কপি এসে পৌঁছায় নিম্ন আদালতে। একই সঙ্গে জামিনপ্রাপ্তরা গত ২৪ অক্টোবর আইনজীবীর সই করা সনদ হাটহাজারী থানায় জমা দেন। হাটহাজারী থানায় কর্মরত এক পুলিশ সেটি রিসিভ করে সই এবং সিলমোহর মেরে দেন।
এসবের পর হঠাৎ রোববার সন্ধ্যায় হাটহাজারী থানায় কর্মরত এএসআই মুবিন নামে এক কর্মকর্তা জামিনপ্রাপ্ত আসামি খাইরুল আলমকে গ্রেপ্তার করেন। যদিও ওইসময় জামিনে থাকার বিষয়টি পরোয়ানা তামিল করা মুবিনকে অবহিত করেন। তবে কোনো কথায় কর্ণপাত না করে এএসআই মুবিন ক্ষমতার জোর দেখিয়ে খাইরুলকে নিয়ে থানা হাজতে ঢুকিয়ে দেন।
এমআর/এমএ