উদ্বোধন হচ্ছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, সক্ষমতা বাড়ছে বন্দরের
চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের (পিসিটি) নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে আরও এক বছর আগে। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন। এর মধ্য দিয়ে এক বছরের বেশি সময় পড়ে থাকা টার্মিনালটি দিয়ে অপারেশনাল কাজ শুরু হচ্ছে।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, সময়ের ব্যবধানে বন্দরে পণ্য কিংবা কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ বাড়ছে। বাড়তি এই চাপ সামলাতে পিসিটি নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের মূল জেটি থেকে ভাটির দিকে চট্টগ্রাম ড্রাই ডক ও চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের মধ্যবর্তী প্রায় ২৬ একর জায়গায় নির্মাণ করা হয় এ প্রকল্প। ২০১৭ সালের ১৩ জুন এক হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। তবে কয়েক দফা পিছিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী পিসিটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এটি পরিচালনায় জিটুজি পদ্ধতিতে শিগগিরই সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের সঙ্গে চুক্তি হবে। ইতোমধ্যে সবকিছু প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে গেছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। পিসিটির মধ্য দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো বিদেশি কোনো অপারেটর দিয়ে কোনো টার্মিনাল পরিচালনা করবে।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানায়, পিসিটির অপারেশনাল কাজ শুরু হলে এই টার্মিনালে একসঙ্গে তিনটি জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর সুবিধা থাকবে। এখান থেকে বছরে সাড়ে চার লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা যাবে। এছাড়া, একই টার্মিনালে তেলবাহী জাহাজ ভেড়ানোর সুবিধাও থাকবে।
এই টার্মিনালে রয়েছে ব্যাকআপ ফ্যাসিলিটিজসহ ৫৮৩ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জেটি, ২২০ দীর্ঘ ডলফিন জেটি, ৮৯ হাজার বর্গমিটার আরসিসি ইয়ার্ড, দুই হাজার ১২৮ বর্গমিটার কনটেইনার শুল্ক স্টেশন, দুই হাজার ১৫০ মিটার লম্বা ছয় মিটার উচ্চ কাস্টম বন্ডেড হাউজ, দুই হাজার ৫০০ মিটার রেলওয়ে ট্রাক, ৪২০ মিটার ফ্লাইওভার, এক হাজার ২০০ বর্গমিটার মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ ও পাঁচ হাজার ৫৮০ বর্গমিটারের অফিস বিল্ডিং।
যেখানে, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে নয় মিটার গভীরতা ও ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে পারে। সেখানে এই টার্মিনাল অপারেশনে গেলে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ১০ দশমিক পাঁচ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো যাবে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের ৯৪ ভাগ আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। আবার মূল রপ্তানি বাণিজ্যের ৯৮ শতাংশ এ বন্দর দিয়ে হয়। প্রতি বছর জাহাজ, কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাড়তে থাকায় তা সামাল দেওয়া চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এজন্য সক্ষমতা বাড়াতে নতুন প্রকল্প হাতে নিতে হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষকে।
এমআর/কেএ