শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা জরুরি
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা বিষয়ক প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার জন্য জাতীয় নেতাদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের (ইউএন) বার্ষিক জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলন ‘কপ ২৮’। এর আগে, শিশুদের জীবনকে প্রভাবিত করে এ ধরনের জলবায়ু সংকটের সমাধান খুঁজতে নীতিনির্ধারকদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) ইউনিসেফ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বক্তরা।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের ফারজানা সুলতানা জানান, ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম শিশুদের জলবায়ু সম্মেলন বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি শিশুকে সম্পৃক্ত করে। তখন তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটি জলবায়ু ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শিশুদের একটি প্রতিনিধিত্বকারী দলের পক্ষে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকারের কার্যালয়ে শিশুদের জলবায়ু ঘোষণাপত্রের একটি সংশোধিত সংস্করণ পাঠিয়েছে ইউনিসেফ।
হালনাগাদ ঘোষণাটি এসেছে বাংলাদেশের আটটি বিভাগের প্রতিনিধিত্বকারী ৩৫ জন শিশুর সঙ্গে ইউনিসেফ-সমর্থিত সহযোগিতামূলক এক আলোচনা সভা থেকে। ইয়ুথ অ্যাডভোকেট, জলবায়ু কর্মী, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত শিশু ও শিশু সাংবাদিকসহ শিশুরা যৌথভাবে শিশুদের জলবায়ু ঘোষণার অগ্রগতি মূল্যায়ন করেছে, চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করেছে এবং এগিয়ে যাওয়ার পথের রূপরেখা দিয়েছে।
আলোচনা সভায় শিশুদের পক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে নায়ের হক বলেন, সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়, খরা, বন্যা ও ভারি বৃষ্টির কবলে আমরা আমাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছি। এর ফলে মানসিক ও শারীরিক বিপর্যয় আমাদের শিশুদের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় শিশুদের জীবনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিনিয়োগ বাড়ানোর জরুরি প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেন, জলবায়ু সংকটে বাংলাদেশের শিশুরাই আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান অংশীজন। শুধু শিশু-কেন্দ্রিক জলবায়ু নীতিমালার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির কথা বললেই হবে না, সক্রিয়ভাবে তা বাস্তবায়নও করতে হবে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, বাংলাদেশের শিশুরা জলবায়ু সংকট এবং একটি নিরাপদ স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেঁচে থাকার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, যার স্বীকৃতি দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশু ও তরুণরা যেন তাদের ভবিষ্যৎ গঠনের কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হয়, তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের কথা জোরালোভাবে তুলে ধরার প্রতিশ্রুতিতে ইউনিসেফ অটল রয়েছে।
বাংলাদেশে শিশুদের জন্য জলবায়ু-অভিযোজিত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি সেবা জোরদার করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় শিশুদের প্রস্তুত করতে সরকারের সঙ্গে কাজ করে আসছে ইউনিসেফ।
জেইউ/কেএ