স্ত্রীর পর চলে গেলেন অধ্যাপক মাহফুজও, এতিম হলো ২ শিশু

করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে অনেকটা জয়ীর আসনে বসেছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব ও বীজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মাহফুজুল হক। তিনদিন আগে রিপোর্ট নেগেটিভও আসে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না তার। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমেদ হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গুণী এ কৃষিবিদ।
গত মাসে মাহফুজুল হকের স্ত্রী মারা যান। এবার নিজেই না ফেরার দেশে পাড়ি দেওয়ায় এতিম হয়ে গেল তার দুই শিশুসন্তান।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ড. মাহফুজুল হক কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। তার ফুসফুসের ৭২ ভাগ বিকল হয়ে যায়। তিনদিন আগে তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
গতকাল সোমবার শহীদ শামসুদ্দিন আহমেদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থার অবনতি হলে তাকে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি মারা যান।
গত মাসে (মার্চ) ড. মাহফুজ তার স্ত্রীকে হারান। স্ত্রী ইশরাত জাহান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছিলেন। এক মাসের ব্যবধানে মা-বাবাকে হারিয়ে ড. মাহফুজের দুই শিশুসন্তান এখন শোকের সাগরে ভাসছে।
ড. মাহফুজ ২০১৩ সালে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ড. মাহফুজের মরদেহ মঙ্গলবার সিকৃবি ক্যাম্পাসে আনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে বাদ আসর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রিয় অধ্যাপকের এভাবে চলে যাওয়ায় ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে আসে।
ড. মাহফুজের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার। এছাড়া শিক্ষক সমিতি, অফিসার পরিষদ, কর্মচারী পরিষদ, গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ, গণতান্ত্রিক অফিসার পরিষদ শোক প্রকাশ করেছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. আবু বকর সিদ্দিক মৃত্যুবরণ করেন।
একে/এমএআর