স্বল্প দূরত্বেও বেড়েছে রিকশা ভাড়া

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের আজ তৃতীয় দিন। অন্যান্য দিনের মতোই আজও বন্ধ সব ধরনের গণপরিবহন। অতি প্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন তাদের ভরসা ব্যক্তিগত গাড়ি, সিনিএনজি অথবা রিকশা।
এদিকে পরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে দাপট দেখাচ্ছেন রিকশাওয়ালারা। বাধ্য হয়ে যাত্রীরাও বেশি ভাড়া দিয়েই গন্তব্যে যাচ্ছেন। কাছের-দূরের সব দূরত্বের ভাড়াই বেড়েছে।
বিধিনিষেধের তৃতীয় দিন শুক্রবার হওয়ায় গতকালের তুলনায় রাস্তায় মানুষের সংখ্যা কম দেখা গেছে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাইরে দেখা যায়নি। নেই তেমন ইঞ্জিন চালিত গণপরিবহনও। তাই যারাই ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া বের হচ্ছেন তাদের সবাইকে যাতায়াতে নির্ভর করতে হচ্ছে রিকশার ওপর। কিন্তু মানুষের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে বেশি দূরত্বের পাশাপাশি স্বল্প দূরত্বেও আগের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করছেন রিকশা চালকরা।
রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত যাওয়ার জন্য রিকশা চালকের সঙ্গে দরদাম করছিলেন এরশাদ আলী নামে এক যাত্রী। রিকশা চালক আয়েন উদ্দিন রামপুরা ব্রিজ থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত ভাড়া চেয়েছেন ১২০ টাকা। আশেপাশের বাকি রিকশা চালকরাও একই দূরত্বে ১২০ টাকাই ভাড়া চাচ্ছিল। কেউ তাদের ভাড়া কমাচ্ছিলো না।
যাত্রী এরশাদ আলী বলেন, আগে স্বাভাবিক সময় এই ভাড়া ছিল সর্বোচ্চ ৭০ টাকা। সবকিছু বন্ধ ও যাত্রীদের প্রয়োজনের সুযোগ বুঝে তারা হঠাৎ করেই ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। দূরে, কাছে সব দূরত্বেই ভাড়া বেড়েছে। একজন একটা ভাড়া চাইলে আশেপাশের অন্যরাও একই ভাড়া চায়। দরদামের কোনো সুযোগ নেই।

গুদারাঘাট থেকে গুলশান-২ এর মানারাত চেকপোস্ট পর্যন্ত আগে ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এখন সেই ভাড়া রিকশা চালকরা চাচ্ছেন ৬০ টাকা। বিষয়টি উল্লেখ করে আরেক যাত্রী সোবহান তালুকদার বলেন, আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের জন্য যেহেতু এখন একমাত্র বাহন রিকশা, তাই চালকরা সুযোগটাকে কাজে লাগাচ্ছে। তারা ৩০/৪০ টাকার ভাড়া এখন জোর করে ৬০ থেকে ৮০ টাকা আদায় করছে। ভাড়া কমানোর কথা বললে তারা এক বাক্যে বলছেন ‘যাবো না’।
সাধারণ যাত্রীদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিধিনিষেধের সময় চলাচলকারী একাধিক রিকশা চালকের সঙ্গে কথা হয়। তারাও জানিয়েছেন ভাড়া কিছুটা বেশি চাওয়া হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কেউ কেউ দিচ্ছে, অনেকেই দিচ্ছে না।
নতুন বাজার থেকে মধ্যে বাড্ডা পর্যন্ত ভাড়ার বিষয়টি নিয়ে কথা হয় রিকশা চালক হেকমত উল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, অন্য কোনো গণপরিবহন চলাচল করছে না। আমরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছি। তাই অনেকে আগের চেয়ে কিছুটা বেশি ভাড়া চাচ্ছে। সব রাস্তায় তো আবার চলাচল করতে পারছি না। অনেক সময় আমাদের চাকার হাওয়া ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সড়কে রিকশা উল্টিয়েও রাখা হচ্ছে। তারপরও নিজেদের পেটের কথা চিন্তা করে রাস্তায় বের হই।
এএসএস/এমএইচএস