সরকারি চাকরিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা পুনর্বহালের দাবি

সরকারি চাকরিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা পুনর্বহাল ও ৪১তম বিসিএসে পাস করা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী প্রার্থীদের ক্যাডার সার্ভিসে একাধিক প্রার্থী সুপারিশের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ৪১তম বিসিএস পাস করা ক্যাডার বঞ্চিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীরা।
রোববার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, শোভন চাকমা, জিকো মারমা, অর্পন ত্রিপুরাসহ অনেকে।
লিখিত বক্তব্য সুশান্ত ত্রিপুরা বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বিসিএস সহ সব সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত চাকরির ১ম ও ২য় শ্রেণির ক্ষেত্রে কোটা তুলে দেওয়ার পর আমাদের পক্ষে চাকরির বাজারে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমাদের চাকরি পাওয়ার আশা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে আমরা প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক পরীক্ষায় পাস করার পরও চাকরিতে সুপারিশ প্রাপ্ত হচ্ছি না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল কোটা বাতিলের সময় মহান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, আমাদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য যদি কোটার প্রয়োজন হয় তাহলে যেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। এর জন্য আপনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে বলে দিয়েছেন। কিন্তু আপনার প্রতিশ্রুতির পরও দেখা যাচ্ছে যে, ৪০তম ও ৪১তম বিসিএস -এ আমাদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী থেকে শুধুমাত্র ১ জন করে ক্যাডার সার্ভিসে সুপারিশ করা হচ্ছে। এ অবস্থা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাধাস্বরুপ।
সুশান্ত বলেন, আমরা ২০১৯ সালে ৪১তম বিসিএস আবেদন করি। যার চূড়ান্ত ফলাফল দেওয়া হয় প্রায় চার বছর পর। সেখানে দেখা যায়, আমরা মাত্র ২৪ জন প্রিলি, লিখিত, মৌখিক পরীক্ষায় পাস করি। কিন্তু মাত্র ২৪ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শুধু মৌখিক পরীক্ষা দিলেও মাত্র একজনকে ক্যাডার সার্ভিস সুপারিশ করা হয়েছে।
সুশান্ত ত্রিপুরা আরও বলেন, আপনার কাছে সাধারণ ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী হিসেবে আমাদের আকুল আবেদন, আমাদের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের কোটা সংরক্ষণ ও পুনর্বহাল করার ব্যবস্থা করার জন্য এবং আমরা যারা ৪১তম বিসিএস -এ পাস করেছি কিন্তু ক্যাডার সার্ভিস এ সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি আমাদের জন্য ক্যাডার সার্ভিসে সুপারিশ এর ব্যবস্থা করে আমাদের নতুন জীবন দান করার জন্য। কারণ কোনো দেশের একটা বিশেষ অংশকে বাদ দিয়ে কখনো সে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। যেখানে আপনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন, আপনি বিশ্ব মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন সেখানে আপনার দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী আজ হারিয়ে যেতে বসেছে আর কিছু দিন পর হয়তো বাংলাদেশের বইয়ে লিখা থাকবে বাংলাদেশে কোনো একসময় ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা, বোম, তংচংগ্যা, ওরাঁও, খুমি, পাংখোয়া জাতিগোষ্ঠী ছিল। কিন্তু এখন তারা বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, তারা এদেশ থেকে হারিয়ে গিয়েছে। এখন আমাদের আশা ভরসার একমাত্র ও শেষ আশ্রয়স্থল আপনি।
এমএম/এসএম