হাসপাতাল-কবরস্থানের উদ্দেশে ছুটছে অ্যাম্বুলেন্স

সড়কে বের হলেই চোখে পড়ছে রোগী অথবা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল। ফাঁকা সড়ক হওয়ায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স হর্ন না বাজিয়েই দ্রুত গতিতে ছুটছে। তবে সড়কে জট লাগলে কোনো কোনোটিকে হর্ন বাজিয়ে কবরস্থান অথবা হাসপাতালের দিকে ছুটতে দেখা যাচ্ছে।
গত তিনদিন ধরে রাজধানীর উত্তরাসহ আশপাশের এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে অ্যাম্বুলেন্সের পরিমাণ বেড়েছে। মাত্র এক মাস আগেও এমন চিত্র দেখা যায়নি। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সামনেও লাশবাহী অথবা সাধারণ অ্যাম্বুলেন্সের উপস্থিতি বাড়তে দেখা গেছে।
গত ১৪ এপ্রিল উত্তরার জসিম উদ্দিন রোড থেকে রাজলক্ষ্মী মোড় পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরুত্বের মধ্যে সাতটিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়া কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে পাঁচটিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স দেখা যায়। স্থানীয়রা বলছেন এর আগে এসব এলাকায় এমনটি দেখা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় সব অ্যাম্বুলেন্সেই হয় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া রোগী অথবা করোনার চিকিৎসা নিতে রোগীরা হাসপাতালে যাচ্ছেন। অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগী বা মৃতের স্বজনদেরও অনেক বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত দেখা গেছে। দূর থেকে কথা বললেও প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের নিজের নাম বলতে চাননি।
গত ১৫, ১৬, ১৭ এপ্রিল উত্তরা ৫ নং সেক্টরসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ প্রধান সড়কেও একই চিত্র দেখা গেছে। অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা অনেক বেশি। অনেকেই অ্যাম্বুলেন্সে করে সাত নম্বর সেক্টরের মসজিদে গিয়ে মরদেহ ধোয়ানোর ব্যবস্থা করছেন। আবার অনেকে কবরস্থানেও নিয়ে যাচ্ছেন। গত ১৪ এপ্রিল রাজন নামের একজন তার মৃত দুলাভাইকে ওই মসজিদে ধোঁয়ানোর পর দাফনের জন্যে নিয়ে যান।
অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবহার অনেক বেড়েছে তার প্রমাণ মিললো বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফার কথায়। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদা দ্বিগুণ বেড়েছে। আমাদের সমিতির অধীনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। প্রত্যেকটি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে। অতীতে অর্ধেক ব্যস্ত থাকতো। এখন একটা গাড়িও বসে থাকে না।
গত বছরের সঙ্গে তুলনা করে তিনি জানান, অতীতে আর এমন ক্রাইসিস হয়নি অ্যাম্বুলেন্সের। অনেক মানুষ করোনায় মারা যাচ্ছেন। এই চাহিদা গত এক মাস ধরে তৈরি হয়েছে। এর বাইরে তো সরকারি অ্যাম্বুলেন্স আছেই। আমরা চেষ্টা করছি সর্বাত্মক সেবা দেওয়ার।
প্রায় ১০ এর জনের মতো অ্যাম্বুলেন্স চালক, মালিকদের সঙ্গে আলাপ করেও এমন তথ্য পাওয়া যায়। ঢাকা পোস্টের সরেজমিনেও দেখা যায় অ্যম্বুলেন্সের ব্যবহার অনেকাংশে বেড়েছে।
একে/আরএইচ