আইন বহির্ভূত কার্যক্রম বন্ধে নর্থ সাউথ গ্রুপকে রাজউকের চিঠি
বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন ও প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন বহির্ভূত কার্যক্রম বন্ধ করতে নর্থ সাউথ গ্রুপকে চিঠি দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
রোববার (২১ জানুয়ারি) রাজউক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ আশারাফুল ইসলামের সই করা ওই চিঠি নর্থ সাউথ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে।
নর্থ সাউথ গ্রুপের উদ্দেশে লেখা ওই চিঠিতে রাজউক বলেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ গ্রুপের আবাসন প্রকল্প ‘পূর্বাচল নর্থ সাউথ গ্রিন সিটি’ রাজউকের অনুমোদিত নয়। রাজউকের কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনাতে (২০১৬-২০৩৫) চিহ্নিত মুখ্য জলস্রোত এলাকার জলাশয় ও কৃষিজমিতে অবৈধভাবে বালু ভরাটের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সাইনবোর্ড ও অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচারণা করা হচ্ছে। এটি প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ এর ধারা ৫ ও ৬ এবং রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ৫, ১৯ ও ২০ এবং বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা ২০০৪ (সংশোধিত ২০১২ ও ২০১৫) এর বিধি ১৬(৩) এর পরিপন্থি কার্যক্রম।
চিঠিতে বলা হয়, বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা ২০০৪, (সংশোধিত ২০১২ ও ২০১৫) এর ধারা ১৬(৩) মতে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রকল্প অনুমোদনের আগে প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকার কোনো প্লট বা ভূমি বা ইমারত বিক্রয় বা বরাদ্দ প্রদানের জন্য কোনো প্রকার বিজ্ঞাপন প্রকাশ বা প্রচার কাজ পরিচালনা করা যাবে না।
তাছাড়া, প্রকল্প সংক্রান্ত যেকোনো সাইনবোর্ড, বিজ্ঞাপন প্রচার বা যোগাযোগ পত্রে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত আবাসিক প্রকল্পের অনুমোদন নম্বর উল্লেখ করতে হবে। রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী, কোনো ডেভেলপার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প এবং ডেভেলপার কর্তৃক হস্তান্তর দলিল সম্পাদনের ক্ষমতা বা অধিকার প্রাপ্তির পূর্বে রিয়েল এস্টেট ক্রয়-বিক্রির জন্য প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে প্রচার করতে পারবে না। পাশাপাশি প্রকল্প অনুমোদনের আগে ক্রেতার কাছে ডেভেলপার কোনো রিয়েল এস্টেট বিক্রয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে না।
এছাড়া, এই আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিবন্ধন গ্রহণ না করে কোনো রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। ওই অপরাধের জন্য অনূর্ধ্ব ২ বছর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থ দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। অননুমোদিত রিয়েল এস্টেট প্রকল্পের বিজ্ঞাপন প্রচার বা বিক্রয় করলে অনূর্ধ্ব ২ বছর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থ দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
চিঠির শেষ অংশে বলা হয়, এমতাবস্থায় আপনার প্রতিষ্ঠানকে অবিলম্বে অবৈধভাবে বালু ভরাটের কার্যক্রম বন্ধ, সাইনবোর্ড এবং ভরাটকৃত অংশের বালু, মাটি অপসারণ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ৭ দিনের মধ্যে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০, রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এবং বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪ (সংশোধিত ২০১২ ও ২০১৫) অনুযায়ী মামলাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এএসএস/কেএ