পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়েছেন ১৯৬১ জন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে গত ৭ জানুয়ারি। সংসদ ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। এবারের সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সরাসরি উপস্থিত হয়ে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সংসদ ভোটে রাষ্ট্রপতিসহ দেশের ১ হাজার ৯৬১ জন নাগরিক পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়েছেন। তবে এদের মধ্যে নেই কোনো প্রবাসী। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটা ছোট অংশ ভোট দিয়েছেন পোস্টাল ব্যালটে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসীরা বিদেশে থেকেই ভোটদানে ব্যবস্থার দাবি জানালেও তাদের কেউ পোস্টাল ব্যালটে যথাযথ আবেদন করেননি। তবে ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কেউ আবেদন করেছিলেন। সেগুলোর বেশিরভাগই যথাযথ না হওয়ায় সবাইকে পোস্টাল ব্যালট সরবরাহ করা হয়নি। এক্ষেত্রে মোট ১ হাজার ৯৬১ জন ডাক যোগে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
কর্মকর্তারা আরও বলছেন, পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন পরিপত্র জারি করেছিল। এক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছিল, পোস্টাল ব্যালট সরবরাহ করার জন্য। অন্যদিকে ডাক বিভাগকে অগ্রিম ডাক মাশুল ছাড়াই ব্যালট পৌঁছানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আবার বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি দিয়েছিল ইসি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের কোনো জেলখানায় বা অন্য কোনো আইনগত হেফাজতে আটক থাকলে, কোনো ব্যক্তি তিনি যে ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদানের অধিকারী সেই কেন্দ্র ব্যতীত অন্য কোনো ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত থাকলে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারেন। এছাড়া বিদেশে বসবাসরত কোনো বাংলাদেশি ভোটাররাও নিতে পারেন এই সুযোগ।
এক্ষেত্রে নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন করতে হয়। তিনি যে নির্বাচনী এলাকার ভোটার, সেই এলাকার রিটার্নিং অফিসারের নিকট পোস্টাল ব্যালটে ভোট প্রদানের উদ্দেশ্যে একটি ব্যালট পেপারের জন্য আবেদন করতে হয় এবং অনুরূপ প্রত্যেক আবেদনে ভোটারের নাম, ঠিকানা এবং ভোটার তালিকায় তাহার ক্রমিক নম্বর সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হয়।
রিটার্নিং অফিসার কোনো ভোটারের আবেদন প্রাপ্তির পর, অনতিবিলম্বে ওই ভোটারের নিকট ডাকযোগে একটি পোস্টাল ব্যালট পেপার এবং একটি খাম প্রেরণ করেন, যে খামের ওপর তারিখ প্রদর্শন করত সার্টিফিকেট অব পোস্টিংয়ের একটি ফরম থাকে, যা ভোটার কর্তৃক ডাকে প্রদানের সময় ডাকঘরের উপযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক পূরণ করতে হয়। কোনো ভোটার পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার জন্য তার ব্যালট পেপার প্রাপ্তির পর, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তার ভোট রেকর্ড করার পর ব্যালট পেপারটি তার কাছে পাঠানে খামে ন্যূনতম বিলম্বের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে ডাকযোগে প্রেরণ করতে হবে। রিটার্নিং অফিসার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত ব্যালটের ফলাফল মূল ফলাফলের সঙ্গে যোগ করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে ভোট দিয়েছেন ১ হাজার ৯৬১ জন ভোটার, যারা বিভিন্ন এলাকায় ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। অনেকের আবেদন যথাযথ প্রক্রিয়ায় না আসায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়নি।
উল্লেখ্য, বিদেশে প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছে। ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন ২০ লাখের মতো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। জেলে কয়েদি ছিলেন ২০ হাজার। গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ভোটার ছিলেন ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৩৩ হাজার ১৫৭ জন। ভোট পড়েছে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।
এসআর/এসকেডি