টিয়া পাখিটিও যেন বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল

রাজধানীর আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানসনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখন ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অভিযান চালাচ্ছেন। ভেতরে কেউ জীবিত, আহত বা মৃত আছেন কি না তা খুঁজে দেখছেন তারা।
ভবনের দ্বিতীয় তলায় সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অভিযান পরিচালনার সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দেখেন একটি টিয়া পাখি খাঁচার ভেতরে ছটফট করছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পাখিটির কাছে যতই এগোচ্ছেন পাখিটির ছটফট করা আরও বেড়ে যাচ্ছে। যেন বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল পাখিটি। এই অবস্থা দেখে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ল্যাডার করে পাখিটি উদ্ধার করে নিচে নিয়ে আসেন।

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকাল ৭টায় মিনিটে আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের পর চলা উদ্ধার অভিযানের সময় এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, খাঁচাসহ পাখিটিকে উদ্ধারের পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে অস্থায়ীভাবে নির্মিত কমান্ড সেন্টারে একটি টেবিলের ওপর রাখেন। এ সময় তারা পাখিটিকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন আগুনে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না। পরে শরীরের কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন না দেখতে পেরে পাখিটিকে পানি পান করান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
পাখিটি উদ্ধার করা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলেন, আমরা দুই তলায় সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অভিযান শেষ করে ফেরার পথে একটি বারান্দায় পাখিটিকে দেখতে পাই বাঁচার জন্য ছটফট করছে। চারদিকে ধোঁয়া থাকায় পাখিটির হয়ত নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। আমাদের দেখে পাখিটির যেন বাঁচার আকুতি আরও বেড়ে যায়। তাই হয়ত ছটফট করা আরও বাড়িয়ে দেয়। পরে আমরা পাখিটিকে উদ্ধার করে নিচে নিয়ে আসি।
ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বাবুবাজার ব্রিজের পাশের ছয়তলা ভবনটির কেমিক্যাল গোডাউনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের তিন কর্মীসহ ১৭ জন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ১৮ মিনিটে আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানসনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের ডিউটি অফিসার মাহফুজ রিবেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন আরমানিটোলা খেলার মাঠের পাশে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের খবর পাই রাত ৩টা ১৮ মিনিটে।

প্রথমে ছয়টি ও পরে ভয়াবহতা বেড়ে গেলে আরও চারটিসহ মোট ১০টি ইউনিট পাঠানো হয়। পরে আরও বাড়িয়ে ১৯টি করা হয়। তারা ভবনের চারপাশে অবস্থান নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। এছাড়াও বাড়ির উপরের লোকজনকে উদ্ধারে ল্যাডার ইউনিট যুক্ত করা হয়েছে।
ভবনটির আতঙ্কিত বেশ কিছু বাসিন্দা ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে আগুনের কারণ জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।
এমএসি/এআর/এসএসএইচ