জমছে না ঢাকার ইফতার বাজার

প্রতি বছর রাজধানীর অলি-গলি থেকে শুরু করে বড় হোটেল রেস্টুরেন্টে জমজমাট থাকে ইফতারের বেচাকেনা। তবে এ বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধের কারণে ভাটা চলছে ইফতার সামগ্রীর ব্যবসায়। পেঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, পাকুড়া, আলুরচপ, হালিম, জিলাপি ও মাংসের তৈরি নানা কাবাবসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। যদিও দেখা মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ক্রেতার।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর ফার্মগেট, আসাদগেট, শুক্রাবাদ, পান্থপথ, গ্রীণরোড, কলাবাগান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকেই ইফতারের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরিতে তোড়জোড় শুরু করেন দোকানিরা। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের চাহিদা ও সামর্থ্যের কথা চিন্তা করেই তৈরি করা হয় ইফতার সামগ্রী।

তবে এ বছর অন্যান্য বারের মতো ক্রেতা নেই বলে জানিয়েছেন শুক্রাবাদ বাজারের ইফতার বিক্রেতা হানিফ মিয়া। তিনি বলেন, অন্যান্য বছর গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার ইফতার বিক্রি হয়। কিন্তু এবার প্রতিদিন মাত্র ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার ইফতার বিক্রি হচ্ছে। এখানকার অধিকাংশ ক্রেতাই ছিল শিক্ষার্থী। এবার যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ তাই ক্রেতার সংখ্যাও কম। তাছাড়া কোন স্পেশাল আইটেম নেই শুধু পেঁয়াজু, ছোলাবুট, ঘূর্ণি, জিলাপি,বুন্দিয়া, আলুর চপ, বেগুনি, ডিমচপ বিক্রি করা হচ্ছে।
ইফতার আয়োজনে অনেকের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বিরিয়ানি, কাচ্চি কিংবা তেহারি। দোকানিরাও ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে রোজায় ইফতারের জন্য আস্ত মুরগির বিরিয়ানি, বাসমতি চালের কাচ্চি, স্পেশাল তেহারির আয়োজন রাখছেন। আবার হালিম ছাড়া অসম্পূর্ণ অনেকের ইফতার আয়োজন। তাই মুখরোচক হালিমের বন্দোবস্ত করতে করোনার বিধিনিষেধের মাঝেও দূরদূরান্ত থেকে কলাবাগানের বিখ্যাত মামা হালিমের দোকানে ভিড় করছেন অনেকেই। দাম এবং মান দুটোর সমন্বয় করেই এসব খাবার তৈরি করা হচ্ছে বলে জানালেন বিক্রেতারা।
কলাবাগানের মামা হালিমের বিক্রেতা রফিক উদ্দিন জানান, হালিম পার্সেল হিসেবে ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজের পাতিলে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ছোট পাতিলে গরুর হালিম ২০০ টাকা, খাসির হালিম ২৫০ টাকা, মুরগি হালিম ২০০ টাকা, মাঝারি পাতিলে গরুর হালিম ৫০০ টাকা, খাসির হালিম ৬০০ টাকা, মুরগির হালিম ৫০০ টাকা, বড় পাতিলে গরুর হালিম ১৮০০ টাকা, খাসির হালিম ২০০০ টাকা, এবং মুরগির হালিম ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ এখানে হালিম নিতে আসেন। সন্ধ্যার আগেই সব হালিম শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে অন্যান্য বছর মানুষের আনাগোনা আরও বেশি ছিল। এবার করোনার কারণে অনেকটাই কম।

কল্যাণপুর থেকে হালিম কিনতে আসা সালেহীন চৌধুরী বলেন, বাসার সবাই ইফতারে হালিম পছন্দ করে। তাই এখানে আসা। তবে অন্য বছরের তুলনায় দামটা এবার একটু বেশি মনে হচ্ছে।
এদিকে ইফতারের আগ মুহূর্তে ভিড় বাড়ছে ভাসমান ফলের দোকানগুলোয়। বেড়েছে আনারস, তরমুজ এবং বাঙ্গির চাহিদাও। কেজিপ্রতি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, মাঝারি আকারে বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়, বড় আকারের বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। ২০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ছোট পাহাড়ি আনারস।
আরএইচটি/এসকেডি