ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার দাবি

মুক্তিযুদ্ধের অর্জন ও ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার্থে ধর্মব্যবসায়ী অপশক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’৭১।
সংগঠনের নেতা ও বিশিষ্টজনরা বলছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে হেফাজতের প্ররোচনায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে সহিংসতা ও তাণ্ডব চালানো হয়েছে, তা দেশের মূল ভিত্তিকে আঘাত করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে এই অপতৎপরতা চালানো হলেও এরা মূলত স্বাধীনতা ও সংবিধানকেই আঘাত করেছে। এই অপশক্তিকে আর কোনো ছাড় দেওয়া উচিত হবে না।
সংগঠনের কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক এডিশনাল আইজিপি নুরুল আলমের সভাপতিত্বে রোববার (২৫ এপ্রিল) ‘মুক্তিযুদ্ধের অর্জন ও হেফাজতি তাণ্ডব’ শিরোনামে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্টজনেরা এ দাবি জানান।
সংগঠনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট লেখক হারুন হাবীব বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা বিরোধী ধর্মাব্যবসায়ী মহল যে তাণ্ডব ঘটিয়েছে, তা পূর্ব পরিকল্পিত ও মহান মুক্তিযুদ্ধ, পবিত্র সংবিধানের প্রতি প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ।
এই ঔদ্ধত্যের সুমচিত জবাব দেওয়া না হলে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির এই অনুচরেরা অনুপ্রাণিত হবে। নতুন অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা করবে।
সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ বলেন, সাম্প্রতিক সহিংসতাগুলো ধর্মীয় মৌলবাদীরা রাজনৈতিক পরিকল্পনায় করেছে। কারণ তারা বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সংবিধান অস্বীকার করে। তারা জাতির পিতার ম্যুরাল আক্রমণ করেছে, সরকারি ও সাধারণ জনগণের সম্পত্তি বিনষ্ট করেছে। এদের অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি প্রাপ্য বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, হেফাজতে ইসলামের পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। চিহ্নিত স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে একযোগে তারা রাষ্ট্রকে আঘাত করেছে। মাওলানা মামুনুল হকসহ এদের নেতৃরা নৈতিকতা বিবর্জিত কাজে নিয়োজিত। এরা পাকিস্তানি হানাদার সৈন্যদের একালের সহযোগী। অতএব এদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মৃধা বেনু মুক্তিযুদ্ধের আদর্শধারী সব মহলকে ধর্মান্ধ অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ কামাউদ্দিন বলেন, এদের প্রতিরোধ করা না গেলে এই অপশক্তি জাতির বহু অমঙ্গলের কারণ হবে। সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মনসুর আহমদ দাবি করেন, সরকারি পদক্ষেপের সাথে সাথে সারা দেশে এই স্বাধীনতা বিরোধী মহলের অপকর্মের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে।
সাবেক এমপি ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার জেনারেল খালেদ মোশাররফের কন্যা মাহজাবীন খালেদ নতুন প্রজন্মকে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে জেগে ওঠার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাধীন বাংলা বেতারের বিশিষ্ট শিল্পী ও সংগঠনের নারী বিষয়ক সম্পাদক বুলবুল মহলানবীশ, কেন্দ্রীয় নারী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীত শিল্পী ও শিক্ষাবিদ ইফফাত আরা নার্গিস, ময়মনসিংহ বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও বিভাগীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ রফিকুজ্জামান।
জেইউ/এমএইচএন/ওএফ