মানবাধিকার কমিশনের সাথে এইচআরএফবির বৈঠক
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে চেয়ারম্যানসহ সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দেশের ২০টি মানবাধিকার সংগঠনের জোট হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশের (এইচআরএফবি) একটি প্রতিনিধি দল।
আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে এ সাক্ষাতকালে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মো. আশরাফুল আলম, পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কাজী আরফান আশিক উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলে নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, মানবাধিকার কর্মী তামান্না হক রীতি ও কাপেং ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে তাদের বক্তব্য এবং কমিশনের সহায়তায় বিবিধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন প্রতিনিধিদল।
বৈঠকে প্রতিনিধিদল উপস্থাপিত নানাবিধ বিষয়ের ওপরে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ, ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) ও বাংলাদেশের অবস্থান, মানবাধিকার সুরক্ষার বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের চলমান প্রেক্ষাপট উঠে আসে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান জানান, আলোচনায় বান্দরবানের লামা উপজেলায় ম্রো জাতিগোষ্ঠীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় কমিশনের আন্তরিক ভূমিকা এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার খাসিয়াপুঞ্জিতে খাসিয়া জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার সুরক্ষায় কমিশনের ইতিবাচক পদক্ষেপের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এইচআরএফবির প্রতিনিধিদল।
আরও পড়ুন
উল্লিখিত প্রেক্ষাপটে, কমিশনের ভূমিকায় যে সংশ্লিষ্ট সমস্যার অগ্রগতি হয়েছে তা মানবাধিকার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে বলে প্রতিনিধিদল মন্তব্য করেন। বৈঠকে জাতীয় কমিশনের সাথে একযোগে ও সমন্বিতভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন এইচআরএফবির প্রতিনিধিদল।
এতে সমর্থন জানিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ মানবাধিকার সুরক্ষিত ও সমুন্নত রাখতে সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
আলোচনায় পার্বত্য চট্টগ্রামে কেএনএফের সন্ত্রাসী কাজের নিন্দা প্রকাশ করে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ। একইসাথে কেএনএফের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে কোনো ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রতিনিধিদল।
ইউশা রহমান বলেন আলোচনায় তারা উল্লেখ করেন, বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের দুটি শাখায় এবং কৃষি ব্যাংকের একটি শাখায় কেএনএফের সদস্য দলের নেতৃত্বে হামলা, টাকা লুট, রুমা শাখার ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, ব্যাংকের সিকিউরিটির দায়িত্বে নিয়োজিত গার্ড, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ওপর আক্রমণ এবং আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে গত ৭ এপ্রিল থেকে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। তারা লক্ষ্য করেছে যে, তল্লাশি পরিচালনাকালে নিরাপত্তাহীনতায় ও আতঙ্কিত হয়ে কুকি চিন জনগোষ্ঠীর অনেক নিরপরাধ ব্যক্তিও বসতবাড়ি ছেড়ে বনভূমিতে আশ্রয় নিচ্ছেন। এর ফলে তাদের জীবন-জীবিকার ওপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
অভিযোগ পাওয়া যায়, ৫ কেজির বেশি চাল কিনতে বাধা দেওয়া হয়। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার এবং ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান এইচআরএফবির প্রতিনিধিদল।
প্রতিনিধিদলের উপস্থাপিত দাবির প্রেক্ষাপটে কমিশনের চেয়ারম্যান পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ, সহিংসতামুক্ত ও ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। সামগ্রিক বিবেচনায় যাতে পাহাড়ি এলাকার মানবাধিকার সুরক্ষিত থাকে তা নিশ্চিত করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জেইউ/এনএফ