আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুনকে নিয়ে চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী শুক্রবার

পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফিতে এক অনন্য শৈলীর নির্মাতা আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন। শিল্পাঙ্গনে ক্যামেরার কবি হিসেবেও ব্যাপক সমাদৃত তিনি। এবার তার জীবনের বর্ণাঢ্য অভিযাত্রা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘নাসির আলী মামুন ইন প্রেইজ অব শ্যাডোজ’।

শুক্রবার (১০ মে) বিকেল ৪টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

প্রিমিয়ার শো’র আগে উদ্বোধনী পর্ব সম্পন্ন হবে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন প্রথিতযশা প্রাবন্ধিক ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক বদরুদ্দীন উমর। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। 

এছাড়া, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দিবেন বিশিষ্ট নাট্য নির্দেশক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু এবং প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম।

৬২ মিনিট দীর্ঘ এই প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রোট্রেট ফটোগ্রাফির উন্নয়নে নাসির আলী মামুনের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকাকে  উপস্থাপন করা হয়েছে। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশি নির্মাতা মকবুল চৌধুরী। কোলাকার প্রডাকশনের ব্যানারে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটিতে আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন ব্রিটিশ মিউজিক কম্পোজার জ্যাক ব্লুর।

প্রায় পাঁচ দশক নাসির আলী মামুন সৃজনশীল এবং খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের বিভিন্ন দুর্লভ মুহূর্ত ক্যামেরায় বন্দি করে চলেছেন। তাঁর শিল্পীত স্পর্শে আলোকচিত্রগুলো যেন মূর্ত হয়ে ওঠে। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনেক ছবি তোলার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছেন। তাঁর তোলা মাওলানা ভাসানী, কবি জসিম উদ্দীন, শিল্পী এস এম সুলতান, শিল্পী কামরুল হাসান, মাদার তেরেসা, লেস ওয়ালেসা, মিখাইল গরবাচেভ, ডেসমন্ড টুটু, বিল ক্লিনটনসহ অসংখ্য বিশ্ববরেণ্য মানুষের ছবি ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। প্রামাণ্যচিত্রে তার সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের নানা দিকের পরিস্ফুটন ঘটানো হয়েছে।

সত্তরের দশকে (১৯৭২ সালে) বাংলাদেশে পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির সূচনা করেন নাসির আলী মামুন। তার অনুসন্ধানী ক্যামেরায় বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রেষ্ঠ মানুষের দুর্লভ মুহূর্তগুলো বন্দি হয়ে আছে। আলোকচিত্র শিল্পে নতুন এক ঘরানার সূচনা করেন তিনি। এ পর্যন্ত প্রায় আট হাজার মানুষের লক্ষাধিক পোর্টেট ফটোগ্রাফি করেছেন তিনি। দেশে-বিদেশে তার অর্ধশতাধিক একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে। কুড়িয়েছেন সুনাম এবং অর্জন করেছে খ্যাতি।

বাংলাদেশের বহু বিখ্যাত ছবি তিনি ফ্রেমবন্দি করেছেন। তিনি তার শৈল্পিক জীবনে শিল্পকলা পদক, বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ, এম এ বেগ পদক, জীবনের জয়গান আজীবন সম্মাননা, ছবি মেলা আজীবন সম্মাননাসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

কেএ